ছোঁওয়া: দৃষ্টিহীন শিশুদের আবির খেলা। আলিপুরদুয়ারে। ছবি: নারায়ণ দে।
লাল, সবুজ ও হলুদ আবিরের কোনও পার্থক্য নেই ওঁদের কাছে। আবিরে মিঠে গন্ধ নিয়ে, দু’আঙুলের মাঝে আবির গুঁড়ো ছুঁয়েই খুশিতে নেচে ওঠে ওদের মন। দোলযাত্রার ঠিক আগে আলিপুরদুয়ার বীরপাড়া সুবোধ দে স্মৃতি দৃষ্টিহীন বিদ্যালয়ে এই ভাবেই আগাম উৎসবে মেতে উঠল বিপ্লব বর্মন, রাজ ঘোষ, সনম ওরাঁওরা।
আলিপুরদুয়ার শহর সংলগ্ন বীরপড়া এলাকায় রয়েছে দৃষ্টিহীন স্কুলটি। এই আবাসিক স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩২। শুক্রবার শিক্ষকেরাই স্কুলে আবির নিয়ে এসেছিলেন। প্রথম শ্রেণির চঞ্চল ছাত্র রাজ রংবেরঙের আবিরে সাজানো প্লেট হাতে তুলে নিয়ে নাকের কাছে ধরে আলতো করে গন্ধ শুঁকল। কিছু ক্ষণ পরেই স্কুলের অন্যদের হাতেও আবির তুলে দিলেন শিক্ষক অজিতকুমার দাস।
একে অপরের গাল ছুঁয়ে ছুঁয়ে আবির মাখানো শুরু করল রুপালি, সনমরা। নিজেরাই জানাল, পৌষ মাসে রান্নার মাসিকে পিঠে করতে বলা থেকে সরস্বতী পুজোয় খিচুড়ি—কোনও উৎসবই বাদ যায় না তাদের স্কুলে। দোলে আবির ছাড়াও রঙ-পিচকিরি নিয়েও খেলায় মেতে ওঠে তারা।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশুতোষ সাহা জানান, রঙ দেখতে না পেলেও আনন্দে খামতি থাকে না ওদের। শিক্ষক অজিতবাবু জানান, ‘‘সকলেই বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছোট থেকে দোল উৎসব পালন করে। আবাসিক স্কুলে সেই সময় ছুটি থাকে না। তাই আমারাও বছর কয়েক ধরে স্কুলেই রং খেলার আয়োজন করছি। ওরা স্পর্শ করে গন্ধ শুঁকেই খুশিতে মেতে ওঠে।’’