এত বেশি টাকা দিতে হয় কেন, প্রশ্ন বহিরাগত পরীক্ষার্থীদেরই
education

‘পর্ষদকর্তারা খোঁজ নিন!’

এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্যদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক আনন্দমোহন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে এবং পর্ষদ, দু’পক্ষই তদন্ত করবে। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’ 

Advertisement

সৌমিত্র কুণ্ডু 

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৯:১০
Share:

ঘেরাটোপে: শুভমায়া এসএন স্কুলে পরীক্ষার্থীরা। নিজস্ব চিত্র

কী ভাবে বহিরাগত পরীক্ষার্থীরা ১৯টি মোবাইল নিয়ে বাগডোগরার শুভমায়া এসএন স্কুলে ঢুকল, তার জবাব খুঁজতে এ বারে তদন্তে নামল প্রশাসন ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক। সেই সঙ্গে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগে প্রশ্ন বাইরে চলে আসার ক্ষেত্রে বারবার মালদহ, শিলিগুড়ি, কোচবিহারের নাম জড়ানোয় উদ্বিগ্ন পর্ষদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার একাংশ। এ দিন মধ্যশিক্ষা পর্যদের উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার দায়িত্বে থাকা আধিকারিক আনন্দমোহন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রশাসনের তরফে এবং পর্ষদ, দু’পক্ষই তদন্ত করবে। সেই মতো ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’

ঘটনার পরেই জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে বিষয়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও জেলাশাসকের দফতরে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোবাইল ফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করে পর্ষদের দফতরে পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার ক্ষেত্রে যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সে জন্য পরীক্ষা-পর্ব মিটলেই তদন্তের কাজ করা হবে বলে আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন। শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) রাজীব প্রমাণিক বলেন, ‘‘তদন্ত পর্ষদের তরফেই করা হবে। আমরা সমস্ত কিছু জানিয়েছি।’’
বাগডোগরারই চিত্তরঞ্জন হাইস্কুল থেকে পরীক্ষা দিয়েছে এই বহিরাগতরা। সেই স্কুলের কয়েক জন শিক্ষক জানান, একশোর বেশি বহিরাগত পরীক্ষার্থী তাঁদের স্কুল থেকে পরীক্ষা দেন। শিক্ষকদের অনেকে বহিরাগত পরীক্ষার্থীদের কয়েকবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ জানিয়েছে, স্কুলে নাম নথিভুক্ত করার খরচ যেখানে ২৩০ টাকা এবং স্কুলের তরফে পরিকাঠামোবাবদ যেখানে আর ১০০ টাকা নেওয়া হয়, সেখানে তাদের অনেকেই পাঁচ হাজার টাকা করে খরচ করতে হয়েছে। তাদের কয়েক জন জানায়, কর্মক্ষেত্রে পদোন্নতির জন্য অনেকেই মাধ্যমিক দিচ্ছে। তবে তার জন্য তাদেরও অনেক টাকা খরচ করতে হচ্ছে। কীসের জন্য এত টাকা লাগে? শিক্ষকমহল থেকে দালালচক্রের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। যদিও পড়ুয়ারা কেউ এই নিয়ে কিছু বলতে চায়নি। কী ভাবে তারা এখানকার খোঁজ পেয়ে সেই মালদহ বা তার সংলগ্ন এলাকা থেকে উজিয়ে এসে নাম নথিভুক্ত করে, তা নিয়েও স্পষ্ট করে বলতে চায়নি। তাদের কেউ কেউ শুধু বলেছে, ‘‘প্রশাসন, পর্ষদের কর্তারা একটু খোঁজ নিলেই বুঝতে পারবেন। খোঁজ নিন, সব জানতে পারবেন।’’ বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা তপতী হালদারও বলেন, ‘‘বহিরাগত পরীক্ষার্থীরা এ সব নিয়ে কিছু বলতে চান না।’’

Advertisement

অভিযুক্ত ১৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে দুই জন মহিলা রয়েছে। এই ১৮ জনই বহিরাগত পরীক্ষার্থী। কাপড়ের মধ্যে লুকিয়ে মোবাইল ফোন নিয়ে তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকেছিল। বাগডোগরা চিত্তরঞ্জন হাইস্কুলের পরীক্ষার্থী হিসেবেই তারা নাম নথিভুক্ত করিয়েছে। এমন শতাধিক পরীক্ষার্থীকে ওই স্কুল থেকে পরীক্ষায় বসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ওই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই মালদহের বাসিন্দা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন