প্রতীকী চিত্র।
বিজেপি ও কংগ্রেসের হাত ধরে আস্থা ভোটে পঞ্চায়েতের উপসমিতি থেকে দলীয় সদস্যদের হটিয়ে দিলেন তৃণমূলেরই পঞ্চায়েত সদস্যরা। ফলে দলীয় প্রধানের গঠন করা তিনটি উপসমিতি ভেঙে গেল। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ ঘটনা কালিয়াচক ২ ব্লকের মোথাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে। রাজনৈতিক মহলে আলোচনা, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরেই এ ঘটনা। তৃণমূলের একটি গোষ্ঠীর বক্তব্য, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ অমান্য করে এই ঘটনা হল। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী জানিয়েছে, দলীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ বারবার দলে জানানো হলেও পদক্ষেপ করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই আস্থাভোটে প্রধানের গঠন করা উপসমিতি ভাঙা হল। এ দিকে এ দিনের এই আস্থা ভোটকে ঘিরে মোথাবাড়ি পঞ্চায়েতে ছিল চাপা উত্তেজনা। গন্ডগোলের আশঙ্কায় বিশাল পুলিশবাহিনী পঞ্চায়েত অফিস চত্বরে উপস্থিত ছিল। শেষ পর্যন্ত অবশ্য নির্বিঘ্নেই আস্থা ভোট হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
গত পঞ্চায়েত ভোটে মোথাবাড়ি পঞ্চায়েতের ২৩টি আসনের মধ্যে ১৬টি পেয়েছিল তৃণমূল। বাকি ৪টি আসন কংগ্রেস, ১টি বিজেপি ও ২টি আসন পায় নির্দল। পঞ্চায়েতের প্রধান হন তৃণমূলের নিলুফা ইয়াসমিন। জানা গিয়েছে, এক বছরের মধ্যেই এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল শিবির দু’টি ভাগে ভাগ হয়ে যায়।
গত ১৫ জুন পঞ্চায়েতের তিনটি উপ সমিতির বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে বিক্ষুব্ধ ৮ জন তৃণমূল সদস্য-সহ কংগ্রেস ও বিজেপির সদস্যরা। বৃহস্পতিবার ছিল আস্থা ভোট বা তলবি সভা। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, তলবি সভায় অনাস্থা ডাকা তৃণমূলের ৮ জন পঞ্চায়েত সদস্য, একজন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য, কংগ্রেসের ৪ জন ও বিজেপির এক জন পঞ্চায়েত সদস্য উপস্থিত ছিলেন। পঞ্চায়েতের প্রধান ও তাঁর শিবিরের ১১ জন পঞ্চায়েত সদস্য হাজির হননি। বিডিওর প্রতিনিধি হিসেবে আস্থা ভোট নিতে পঞ্চায়েতে উপস্থিত ছিলেন কালিয়াচক ২ ব্লকের ডেপুটি সেক্রেটারি সারথি মণ্ডল। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে আস্থা ভোটে তিনটি উপসমিতি ভেঙে যায়।
বিক্ষুব্ধ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য আব্দুল সায়েম বলেন, ‘‘এ দিন আমরা ১৪ জন আস্থা ভোটে যোগ দিই। বাকি পঞ্চায়েত সদস্যরা আসেননি। আগামী দিনে আমাদের মতো করে সমস্ত উপসমিতি ও সঞ্চালক গঠন করব।’’ আর এক বিক্ষুব্ধ পঞ্চায়েত সদস্য আবু বাককার সিদ্দিক বলেন, ‘‘আমরা বাধ্য হয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির হাত ধরেছি। প্রধানের বিরুদ্ধে একাধিক বার দলীয় স্তরে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও ফল পাইনি। এ বার সমস্ত উপসমিতি পরিবর্তন করব।’’ পঞ্চায়েত প্রধান নিলুফা বলেন, ‘‘এটা সম্পূর্ণ দল বিরোধী কাজ। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে এই কাজ করল। বিষয়টি জেলা নেতৃত্বকে জানাচ্ছি।’’ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরো ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হবে। তাঁদের সিদ্ধান্ত মেনে পদক্ষেপ হবে।" বিজেপির জেলা কার্যকরী সভাপতি অজয় গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ সব স্থানীয় পঞ্চায়েত স্তরের বিষয়। ঘটনা জানা নেই।’’