এক বধূর মুখ অশালীন ছবিতে লাগিয়ে তা পাড়ার লোকেদের মোবাইলে বিলি করার অভিযোগ পেয়ে পুলিশ এক সিভিক পুলিশের কর্মী-সহ অপর এক যুবককে আটক করে। এর পরে অভিযোগকারীর বাড়িতে চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠল একদল মহিলার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, ওই মহিলা-সহ একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া তাঁর মেয়েকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার ধূপগুড়ি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়।
মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত পাঁচ মহিলাকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনার জন্য অভিযোগকারী মহিলাকে দায়ী করে তাঁকে এলাকাছাড়া করার হুমকি দিয়েছেন এলাকার তৃণমূলের এক মহিলা কাউন্সিলর। ঘটনায় দুই মেয়েকে নিয়ে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বছর ৩৬-এর ধূপগুড়ি শহরের নয় নম্বর ওয়ার্ডের ওই গৃহবধূ। অভিযোগকারী বধূ জানান, ওই ছবি আমার নয়। কম্পিউটারে কারসাজি করে তৈরি করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত করলে তা স্পষ্ট হবে। আমাকে নানা সময়ে কয়েকজন কুপ্রস্তাব দিয়েছে। তাতে রাজি না হওয়ায় ওই কাজ করা হয়েছে। সম্প্রতি ব্যাঙ্কের পাশবই করা-সহ মোবাইলের সিম কার্ডের জন্য আমি কয়েকবার ছবি তুলি। সেখান থেকেই কোনওভাবে ছবি চুরি করা হয়েছে। পরে মুখটি ব্যবহার করে অশ্লীল ছবি তৈরি করা হয়েছে।
ধূপগুড়ি থানার আইসি যুগল চন্দ্র বিশ্বাস অবশ্য বলেন, “কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। শুধু ছবি বিলির অভিযোগ নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। আটক মহিলাদের বিরুদ্ধে সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযোগ জমা পড়েনি।”
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই বধূর স্বামী শহরের বাইরে ব্যবসা করেন। দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। গত দু’সপ্তাহ ধরে একটি অশালীন ছবি এলাকায় বহু লোকজনের মোবাইলে ঘুরছিল। বাসিন্দাদের মুখে মুখে ছড়ায়, ওই ছবি ওয়ার্ডের ওই বধূর। গত সোমবার বিষয়টি ওই গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে জানিয়ে আসেন কয়েকজন প্রতিবেশী। ওইদিন সন্ধ্যায় ওই মহিলা ওই ঘটনায় আটজন সন্দেহভাজন যুবকের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তাদের মধ্যে এক সিভিক পুলিশও রয়েছে। বুধবার দুপুরে ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা অভিযুক্ত সিভিক পুলিশ স্বপন রায়-সহ অপর এক যুবককে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। যদিও স্বপনের দাবি, “ছবির বিষয়ে কিছু জানি না। আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।”
পাড়ার দুই যুবককে পুলিশ ধরার পর এলাকার পঞ্চাশেক মহিলা দল বধূর বাড়িতে চড়াও হয়। তার পরে গালিগালাজ, মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশ গিয়ে পাঁচজন মহিলাকে ধরে। অভিযুক্তদের নিঃশর্তে ছাড়ার দাবি সহ অভিযোগকারী মহিলাকে এলাকা ছাড়া করার দাবি তোলেন তৃণমূলের ওয়ার্ড কাউন্সিলর। কাউন্সিলর নমিতা রায়ের কথায়, “ওই গৃহবধূর চরিত্র ভাল নয়। ওটা ওঁরই ছবি মনে হয়েছে। উনি পাড়ার লোকজনকে বদলাম করছেন। তাই আমরা চাই উনি এলাকা ছেড়ে চলে যান। আর পুলিশ যাদের ধরেছে, তাদের না ছাড়লে আন্দোলন হবে।”