আলু-বোঝাই গাড়িতে জট পথে

হিমঘরের সামনে দাঁড়ানো আলু বোঝাই ট্রাক, ট্রাক্টর সহ বিভিন্ন গাড়ির লাইনের জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিপর্যস্ত থাকল জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি যোগাযোগ। । জলপাইগুড়ি শহর থেকে ৭৩ মোড় হয়ে জাতীয় সড়ক সংযোগকারী রাস্তায় দু’টি হিমঘর রয়েছে। আলুর বোঝাই গাড়ির লাইনে গত ৫ দিন ধরেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাটি অবরূদ্ধ হয়ে থাকছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০১৫ ০২:২২
Share:

হিমঘরের সামনে দাঁড়ানো আলু বোঝাই ট্রাক, ট্রাক্টর সহ বিভিন্ন গাড়ির লাইনের জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিপর্যস্ত থাকল জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি যোগাযোগ। । জলপাইগুড়ি শহর থেকে ৭৩ মোড় হয়ে জাতীয় সড়ক সংযোগকারী রাস্তায় দু’টি হিমঘর রয়েছে। আলুর বোঝাই গাড়ির লাইনে গত ৫ দিন ধরেই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তাটি অবরূদ্ধ হয়ে থাকছে বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার সকালে সংযোগকারী রাস্তা থেকে যানজট ছড়িয়ে পড়ে জাতীয় সড়কেও। আলু বোঝাই গাড়ির লাইন উঠে আসে জাতীয় সড়কেয় যার জেরে জলপাইগুড়ি থেকে ফাটাপুকুর পর্যন্ত ৩১ ডি জাতীয় সড়কের ২০ কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজট ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ৯টা থেকে অন্তত দু’ঘণ্টা জাতীয় সড়কে বাস, ছোটগাড়ি, পণ্যবাহী ট্রাক পুরোপুরি থমকে থাকে বলে অভিযোগ।

Advertisement

জলপাইগুড়ি এবং রাজগঞ্জ দু’টি থানা থেকে পুলিশ বাহিনী গিয়ে জট ছড়ানোর কাজ শুরু করলে, গাড়ির নড়াচরা শুরু হলেও, পুরোপুরি জট কাটতে বিকেল গড়িয়ে যায়। যার জেরে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি যাতায়াতের ১ ঘণ্টা সময় এ দিন বেড়ে অন্তত ২ থেকে ৩ ঘণ্টায় দাঁড়িয়ে যায়। জলপাইগুড়ি থেকে জাতীয় সড়ক সংযোগকারী ৭৩ মোড়ের রাস্তা অবশ্য রাত পর্যন্ত আলুর বোঝাই গাড়িতে অবরূদ্ধ ছিল।

আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বিভিন্ন আলু নিয়ে আসা যাবে বলে বিভিন্ন হিমঘর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন। ‘আগে আসার ভিত্তিতে’ কয়েকটি হিমঘরে আলু ঢোকার প্রক্রিয়া চলতে থাকায়, কৃষক এবং আলু ব্যবসায়ীদের মধ্যে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে। তবে যে কারণে মূল সমস্যা তৈরি হয়েছে তা হল আলু রাখার জায়গার সঙ্কট। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকে এবার অন্তত ১ লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। যদিও, সদর ব্লকে ৬টি হিমঘর মিলিয়ে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আলু রাখা সম্ভব। হিমঘরে যে পরিমাণ আলু রাখা সম্ভব উৎপাদন হয়েছে তার দ্বিগুণ। পরে আলু রাখার সুযোগ মিলবে না এই আশঙ্কাতেই কৃষকরা খেত থেকে আলু তুলে গাড়িতে বোঝাই করে হিমঘরের সামনে নিয়ে আসছেন। এক দিন বা দু’দিন পরে আলু রাখার সুযোগ মিলবে জেনেও, হিমধরের সামনেই গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখছেন কৃষকরা। সে কারণেই শুরু হয়েছে যানজট।

Advertisement

জলপাইগুড়ির সদর মহকুমা শাসক বলেন, “যানজটের অভিযোগ পেয়েছি। আলুর গাড়িগুলি অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করে রাস্তা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয় কিনা তার আলোচনা চলছে।”

যানজটে দুর্ভোগে পড়েছে নিত্যযাত্রীরা। যানজটের জেরে গত শুক্রবার থেকেই জলপাইগুড়ি-শিলিগুড়ি রুটে চলা সরকারি বাসগুলি ঘুর পথে চালানো হচ্ছে। অন্তত ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার বাড়তি রাস্তা যেতে হচ্ছে বলে অভিযোগ, যার জন্য দ্বিগুণেরও বেশি সময় লাগছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ। যানজটের জেরে জলপাইগুড়ি থেকে শিলিগুড়ি যাওয়ার সময়ে বাসগুলি চাউনলহাটি, পাঙ্গা, তালমায় হয়ে ফাটাপুকুর হয়ে যাচ্ছে। এ দিনের যানজটের জেরে শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়িগামী বাসগুলি ফুলবাড়ি এলাকার তিস্তা ক্যানেলের পাশ দিয়ে, আমবাড়ি হয়ে জলপাইগুড়ি চলাচল করেছে। নিত্যযাত্রী শুভাশিস দত্তের কথায়, “যানজট এড়াতে সুষ্ঠু কোনও পরিকল্পনা না থাকাতেই সমস্যা তৈরি হয়েছে।”

আলুর কারণে বাস চলাচলের খরচ বেড়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছেন বাস মালিকদের সংগঠন। জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ি সুপার বাস ওর্নাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শিবু দে অভিযোগ করে বলেন, “প্রশাসনের কাছে জানিয়েছি। ফল মেলেনি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement