এই সরকার বাঁচতে দেবে তো আমাদের?
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভা নির্বাচনের আগে আমাদের অনেক সুদিনের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। তাঁর দলের সরকার কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হলে তিনি যে ক’টি বিষয় সবচাইতে বেশি প্রাধান্য দেবেন বলেছিলেন, তার মধ্যে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে সাধারণ মানুষকে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার প্রতিশ্রুতিই ছিল অন্যতম। দেশের মানুষ কিন্তু “আচ্ছে দিন আনেয়ালার” সেই স্বপ্নকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর আবেদনকে কিন্তু ফিরিয়ে দেননি যার ফলে সারা দেশের মানুষই কংগ্রেসের মতো একটা ব্যর্থ ও দুর্নীতিবাজ সরকারকে নির্বাসনে পাঠিয়ে তাঁর দলকেই কিন্তু দিল্লির মসনদে বসার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। অথচ দুভার্গ্যের বিষয় এই যে তাঁর সরকারের চার মাস অতিক্রান্ত হলেও এমন কোনও সুফল আজও আমরা দেখতে পায়নি যা নিয়ে আমরা সাধারণ মানুষ তার সেই প্রতিশ্রুতির উপর আস্থা ও বিশ্বাস রাখতে পারছি। বাজারে ওষুধপত্র থেকে শুরু করে মাছ-মাংস-সবজির দাম হ্রাস পাওয়া তো দূরের কথা তা যেন লুটেরা ব্যবসায়ীদের কবলে পড়ে দিনের পর দিন যেন আরও বেশি লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে যার ফলে সাধারণ মানুষদের জীবন অতিবাহিত করতে নাভিশ্বাস হয়ে উঠছে। উপরন্তু জীবনদায়ী ওষুধের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়ে সাধারণ মানুষদের যে সংকটের মধ্যে ফেলে দিয়েছেন, তাতে আগামী দিনে তাঁরা চিকিত্সার ব্যয় বহন করতে না পেরে মৃত্যুকেই ভগবানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার ভাবনা ছাড়া আর তাদের কোনও উপায়ই থাকবে না বোলেই আমাদের মনে হয়। তাই দেশের একজন বর্ষীয়ান নাগরিক হয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের শুধু একটিই প্রশ্ন, এই যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি একদিন দিল্লির মসনদে আসীন হয়েছিলেন সাধারণ মানুষদের রায়ে, আজ প্রধানমন্ত্রীরর আসন অলংকৃত হয়ে তিনি কি “লঙ্কায় যে যায় সেই রাবণ বনে যান” এই মতকেই শুধু প্রাধান্য দিয়ে দেশবাসীদের দুঃখ দুর্দশার কথা একেবারেই ভুলে যাবেন?
প্রণীতা সেন।
স্বপ্নের মৃত্যু, রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল
রায়গঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন একটা স্বপ্নকে লালন করেছিলেন, এখানে এইমস ধাঁচের হাসপাতাল হবে। অপমৃত্যু ঘটেছে সেই স্বপ্নের।
এখন চিকিত্সার জন্য রায়গঞ্জ এবং তার সন্নিহিত বিরাট অংশের মানুষের একমাত্র ভরসা রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল। সুপার স্পেশালিস্ট হাসপাতাল কবে রায়গঞ্জে গড়ে উঠবে, তার দিনক্ষণ রায়গঞ্জবাসী জানেন না। রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজ হবে, এমন একটা কুমির থানা ভোটের আগে আমরা দেখেছিলাম বটে, কিন্তু এখন সে ব্যাপারে সরকার নিশ্চুপ।
একটা নির্মম বাস্তব হল, রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান দিন দিন নেমে যাচ্ছে। ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক এখানে রক্তাল্পতায় ভোগে। আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিন থাকে খারাপ, আই সি ইউ নেই, নেই মানসিক রোগীদের পৃথক ওয়ার্ড। অল্প বেড, রোগীরা থাকেন মাটিতে। ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানে যথেষ্ট অনিয়ম, হাসপাতালের কিচেন নরকতূল্য। চিকিত্সকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বেশির ভাগ প্রাইভেট প্র্যাক্টিসে বেশি অভিযোগ।
সব মিলিয়ে “নেই রাজ্য’ আর নৈরাজ্যের নাম এখন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতাল। জেলাশাসক কিংবা জনপ্রতিনিধিরা হাসপাতাল পরিদর্শনে এলে কিংবা সংবাদপত্রে লেখা বেরোলে কিছুদিন একটু ঠিকঠাক চলে, তার পর আবার শুরু হয় নৈরাজ্য। রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালেরই চিকিত্সা প্রয়োজন, কিন্তু কবে এবং কী ভাবে তা হবে, জানেন না রায়গঞ্জের আমজনতা।
সামিম আখতার বানু। রায়গঞ্জ, উত্তর দিনাজপুর
প্রবীণ নাগরিক জাগরণ মঞ্চ
প্রবীণ নাগরিকের জাগরণ আজ বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য সকল ভারতবাসী প্রবীণ নাগরিকের। কেন্দ্রীয় সরকারের রেল দফতর প্রধান নাগরিকের রেলসড়কে যাতায়াতের জন্য বিশেষ ছাড়ের সুযোগ সুবিধা দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পরিবহণ দফতর দূর পাল্লার সড়কে যাতায়াতের জন্য কোনও রকম ছাড় নেই। প্রবীণ নাগরিকের জনমানসে সংঘবদ্ধ ভাবে যদি বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা বাস্তবে রূপায়িত হয়, তবে প্রত্যেক প্রবীণ নাগরিকগণ খুবই উপকৃত হবে অর্থনৈতিক দিক থেকে।
এই কথা সর্বজনসম্মত যে প্রবীণ নাগরিকগণ বয়সের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রকম রোগে জর্জরিত হয়ে বিভিন্ন ডাক্তারবাবুদের শরণাপন্ন হয়, সেখানে ডাক্তারবাবুদের রোগ নির্ণয়ের দক্ষিণার পরিমাণ এত বেশি হারে ধার্য হওয়ার জন্য। বিশেষজ্ঞ ডাক্তারবাবুদের ধারের কাছে প্রবীণ নাগরিকগণ চিকিত্সা করার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন।
প্রবীণ নাগরিকের জাগরণ মঞ্চ এই বিষয়ে বিশেষ দৃষ্টিপাত করে সমবেত ভাবে প্রতিবাদ সূচি ঘোষণা করলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যেমন নার্সিং হোম, ক্লিনিক প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে সব রকম ছাড়ের সুযোগ সুবিধার বন্দোবস্ত হবে এবং এই প্রস্তাবের যথাযথ কার্যকর হবে।
দেবরঞ্জন চৌধুরী। শিলিগুড়ি।