হেলিকপ্টারে যান্ত্রিক ত্রুটি ও জ্বালানি তেলের অভাবে বুধবার উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহের জনসভা বাতিল হয়ে গেল। তবে সভামঞ্চে উপস্থিত রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী নিমু ভৌমিকের মোবাইলে তিনি ফোন করেন। নিমুবাবুর ফোনটি ছিল যশোদীপ ভৌমিক নামে দলের এক কর্মীর কাছে। তিনি তখন সেই ফোন লাউডস্পিকারে করে তা মাইকের সামনে ধরেন। মাইকে শোনা যায় রাজনাথবাবুর গলা। চোস্ত হিন্দিতে তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “হেলিকপ্টারে কিছু সমস্যা দেখা দেওয়ায় আমি কালিয়াগঞ্জে যেতে পারলাম না। আপনারা ক্ষমা করে দিন। আপনারা নিমুবাবুকে জয়ী করুন।” সেই ভাবেই তিনি আশ্বাস দেন, “বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করলে নিমুবাবুকে মন্ত্রীর মর্যাদা দেওয়া হবে। আমি খুব শীঘ্রই কালিয়াগঞ্জে আসার চেষ্টা করছি।” দলের জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরী বলেন, “শীঘ্রই তাঁকে ফের এখানে আনার চেষ্টা হবে।”
বুধবার দুপুর ২টা নাগাদ কালিয়াগঞ্জের হাসপাতাল পাড়া এলাকার একটি মাঠে রাজনাথবাবুর ওই জনসভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কথা ছিল, বীরভূমের রামপুরহাটে একটি সভা শেষ করে হেলিকপ্টারে চেপে পৌনে দু’টো নাগাদ সভাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনী এলাকার অস্থায়ী হেলিপ্যাডে নামবেন তিনি। দুপুর দু’টো নাগাদ মঞ্চে হাজির হন বিজেপি প্রার্থী নিমুবাবু, দলের জেলা সভাপতি শুভ্র রায়চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তী সহ জেলা স্তরের কয়েকজন নেতা।
রাজনাথবাবুর আসতে দেরি হবে বলে ঘোষণা করে তাঁরাই একে একে বক্তব্য পেশ করতে থাকেন। বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ বিজেপি-র কর্মী সমর্থকদের একাংশকে চিৎকার করে মঞ্চের উপরে থাকা শুভ্রবাবু ও শঙ্করবাবুকে উদ্দেশ্য করে বলতে শোনা যায়, ‘রাজনাথবাবু কখন আসবেন? চড়া রোদ মাথায় আমাদের আর কতক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে?’ সেই সময় শুভ্রবাবু ও শঙ্করবাবুকে মঞ্চের উপরে বসেই কাউকে ফোন করতে দেখা যায়। বিকেল চারটে নাগাদ শুভ্রবাবু ঘোষণা করেন হেলিকপ্টারে যান্ত্রিক ত্রুটি ও জ্বালানি তেলের অভাবের জেরে রাজনাথবাবু আসতে পারছেন না। তিনি বীরভূমে সভা শেষ করে আটকে পড়েছেন। এরপরেই নিমুবাবুর ফোনে রাজনাথবাবুর ফোন আসে।
পরে শুভ্রবাবু ও শঙ্করবাবু সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, রাজ্য ও তদারকি কেন্দ্রীয় সরকারের যৌথ ষড়যন্ত্রের কারণেই রাজনাথবাবু এদিন কালিয়াগঞ্জে আসতে পারেননি। বিজেপি-র অভিযোগ হাস্যকর বলে কটাক্ষ করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্য। বিজেপির অভিযোগ গুরুত্ব দিতে নারাজ কংগ্রেসও। রাজনাথবাবু আসছেন না বলে ঘোষণা হতেই এদিন হতাশ হয়ে পড়েন বিজেপি-র কর্মী সমর্থকেরা। তাঁরা মাঠ ছেড়ে চলে যেতে শুরু করেন। সেই সময় বিজেপি প্রার্থী তথা অভিনেতা নিমুবাবু তাঁর অভিনীত বিভিন্ন বাংলা ছবির সংলাপ বলে দলীয় কর্মী সমর্থকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেন।