জীবন সিংহের নাম করে ই-মেলে কেএলও-বিবৃতি

অসমে এনডিএফবি জঙ্গিদের চালানো গণহত্যার রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর ডাক দিয়ে জঙ্গি সংগঠন ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’ (কেএলও)-এর প্রধান জীবন সিংহের নাম করে পাঠানো ই-মেল এসে পৌঁছল সংবাদমাধ্যমের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ফালাকাটা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৪
Share:

অসমে এনডিএফবি জঙ্গিদের চালানো গণহত্যার রেশ এখনও কাটেনি। তারই মধ্যে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে আন্দোলনের তীব্রতা বাড়ানোর ডাক দিয়ে জঙ্গি সংগঠন ‘কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন’ (কেএলও)-এর প্রধান জীবন সিংহের নাম করে পাঠানো ই-মেল এসে পৌঁছল সংবাদমাধ্যমের কাছে। মেলটি কে পাঠিয়েছে, কী উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই খোঁজখবর শুরু করেছে পুলিশ। রাজ্যের এক গোয়েন্দা-কর্তা বলেছেন, “অসমে সাম্প্রতিক জঙ্গি-হানার ঘটনার পরে, জীবন সিংহের নামে পাঠানো এই ই-মেলকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।”

Advertisement

গত ২৮ ডিসেম্বর ছিল কেএলও-র ২১তম প্রতিষ্ঠা দিবস। তবে কেএলও প্রধানের নামে একটি ই-মেল আই-ডি থেকে ওই মেলটি বুধবার দুপুরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে পাঠানো হয়। বিবৃতিতে কামতাপুর ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার জন্য যে সমস্ত সংগঠন ও রাজনৈতিক দল লড়াই করছে, তাদের কেএলও-র আন্দোলনে সামিল হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। কেএলও-র প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে এনডিএফবি, আলফা, এনএসসিএনের-র মতো ন’টি আঞ্চলিক জঙ্গি সংগঠনকে জানানো হয়েছে ‘বিপ্লবী অভিনন্দন’।

দীর্ঘদিন চুপচাপ থাকার পরে ২০১৩-র ডিসেম্বরে জলপাইগুড়ির বজরাপাড়ায় বিস্ফোরণ এবং তার ঠিক পরে মালদহে বাসযাত্রীদের উপরে ইনস্যাস রাইফেল থেকে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল কেএলও-র জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। মনে করা হয়েছিল, তারা ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছে। কিন্তু এর পরেই পুলিশ টম অধিকারী, নীলাম্বর রাজবংশী, মালখান সিংহের মতো নেতাদের একের পরে এক গ্রেফতার করায় কেএলও-র নড়াচড়া কমে যায়।

Advertisement

পুলিশ ও গোয়েন্দাদের দাবি, ১৯৯৩-এ গঠিত হওয়ার পরে সংগঠনের সদস্যদের প্রশিক্ষণ, অস্ত্র দেওয়ার মতো বিভিন্ন কাজে আলফা-র সাহায্য নিত কেএলও। পুনরুত্থানের দ্বিতীয় পর্বে তাদের সহায় হয়েছিল এনডিএফবি জঙ্গিরা। অসমে এনডিএফবি-র সাম্প্রতিক সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে তাই এই ই-মেলকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এক সময় কেএলও জঙ্গিদের প্রবল দাপাদাপি ছিল আলিপুরদুয়ারে। সে জেলার পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবালের কথায়, “কেএলও-র গতিবিধির উপরে নজরদারির প্রশ্নে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। আমরা চুপচাপ বসে নেই। ”

তবে ই-মেলটিতে জীবন সিংহের বক্তব্য বলে যা লেখা হয়েছে, তার সত্যতা নিয়ে ধন্দ কাটছে না পুলিশ ও গোয়েন্দাদের একটা বড় অংশের। গত দেড় বছর ধরে কেএলও-র লেটার হেডে বিবৃতি দিতেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ কোচ। সংগঠনের চেয়ারম্যান তথা শীর্ষ নেতা জীবন সিংহকে সংবাদমাধ্যমে সরাসরি বিবৃতি দিতে শোনেননি কেউ। গোয়েন্দাদের একাংশের বক্তব্য, দীর্ঘকাল অধরা থাকা জীবন সিংহের নাম করে অন্য কেউ বিবৃতি পাঠিয়ে থাকতে পারে। ই-মেল আইডি জাল করা হয়ে থাকতে পারে। সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন