দাবি মতো পণ না পাওয়ায় বধূকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের ইংরেজবাজার থানার বিনোদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টিটিপাড়া গ্রামে। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের লোকেরা থানায় তিন জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম ছায়া মণ্ডল (২৪)। তাঁর বাবার বাড়ি ইংরেজবাজারের অমৃতির কাগমারি গ্রামে। মৃতার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ বছর আগে পেশায় মাছ ব্যবসায়ী পিন্টু মণ্ডলের সঙ্গে বিয়ে হয় ছায়ার। সেই সময় পিন্টু ছায়ার পরিবারের কাছে এক ভরি সোনার হারের দাবি করে। তা তখন দিতে পারেননি ছায়ার পরিবারের লোকেরা।
ছায়ার বাবা পিরু চৌধুরী বছর দশেক আগেই মারা গিয়েছেন। দুই ছেলে ও তিন মেয়েকে নিয়ে কোনওরকমে সংসার চালাতেন পিরু চৌধুরীর স্ত্রী অলকা দেবী। ছায়াই ছোট। তাঁর দুই ছেলেও পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। তাঁরা ধার দেনা করে ছায়ার বিয়ে দেন। ছায়া ও পিন্টুর একটি দুই বছরের মেয়েও রয়েছে। ছায়ার পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোকেরা প্রায়ই তাকে মারধর করত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার গভীর রাতে ছায়ার শাশুড়ি মালো মণ্ডল ফোনে তাঁদের জানান, আগুন পোহাতে গিয়ে তাদের মেয়ে সামান্য আহত হয়েছে। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ছায়ার পরিবারের লোকেরা হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। শ্বশুরবাড়ির কেউ আশপাশে নেই। তার কিছুক্ষণ পরেই গৃহবধূটির মৃত্যু হয়।
এর পরেই মৃতার দাদা ঘুরণ চৌধুরী পিন্টু, তার মা ও ভাসুর স্বপন মণ্ডলের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার পর থেকেই ফেরার অভিযুক্তেরা। ঘুরণবাবু বলেন, “প্রচুর টাকা খরচ করে বোনের বিয়ে দিয়েছিলাম। সেই সময়ে আমরা ছেলেকে একটি সোনার হার দিতে পারিনি। বোনকে প্রায়ই মারধর করা হত। সোনার হার দেব বলেও জানিয়েছিলাম। এ দিন বাড়িতে খবর আসে যে বোন আগুন পোহাতে গিয়ে আহত হয়েছে, তখনই আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা হাসপাতালে আসার কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়। আমরা তাদের সকলের শাস্তি চাই।”
মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মৃতদেহটি ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকেদের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”