যাদবপুর কাণ্ডের পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ফের বার্তা দিয়েছেন, শিক্ষাঙ্গনে ঘেরাও-বিক্ষোভের রাজনীতি করা চলবে না। অথচ এ বার কলেজের চৌহদ্দি ছাড়িয়ে অধ্যক্ষকে তাঁর বাড়ির সামনেই ঘেরাও ও হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। যদিও প্রায় তিন ঘণ্টা ঘেরাও হয়ে থেকেও অধ্যক্ষ যাদবপুরের উপাচার্যের মতো পুলিশ ডাকেননি।
ছাত্রভর্তি নিয়ে দাবি-দাওয়ার জেরে শুক্রবার বিকেলে জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজে ঘটনাটির সূত্রপাত। অধ্যক্ষ ধীরাজ বসাকের বাড়ির সামনে ওই বিক্ষোভে টিএমসিপি-র বেশ কিছু পরিচিতি নেতাকে দেখা গিয়েছে। যদিও ওই নেতাদের দাবি, বিক্ষোভ দেখাতে নয়, তাঁরা আসলে গিয়েছিলেন ক্ষুব্ধ ছাত্রদের নিরস্ত করতে। রাতে পার্থবাবু বলেন, “ঘেরাও-জবরদস্তি দাবি আদায়ের পথ নয়। আমি ঘেরাও না করার যে বার্তা দিয়েছি, সেটা সকলের জন্য। জলপাইগুড়িতে যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে, অত্যন্ত অন্যায় করেছে।”
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তিপর্ব শেষ হয়ে গেলেও অন্তত ৪০ জন আবেদনকারী ভর্তির সুযোগ পাননি। গত এক মাস ধরে তাঁরা আন্দোলন করে আসছিলেন। টিএমসিপি-র নেতা-কর্মীদের সেখানে নেতৃত্ব দিতেও দেখা গিয়েছে। এ দিন বিকেল ৪টে নাগাদ হঠাৎই জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ায় ধীরাজবাবুর বাড়ির সামনে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রীকে জড়ো হতে দেখা যায়। তাঁদের অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় সব আবেদনকারীকে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ তা মানছেন না।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয়ে যায় বিক্ষোভ। খানিক পরেই টিএমসিপির টাউন ব্লক কমিটির নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তাঁদের একাংশকেও স্লোগান দিতে দেখা যায়। ইতিমধ্যে ধীরাজবাবু বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলে ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু হয়। তাঁকে আঙুল উঁচিয়ে হুঁশিয়ারি দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। অধ্যক্ষ অবশ্য দাবি করেন, “যা করার, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনেই করছি। পক্ষপাতিত্বের কিছু নেই।” সাড়ে তিন ঘণ্টা তাঁর বাড়ির সামনে অবস্থান-ঘেরাও চললেও এ দিন পুলিশ আসতে দেখা যায়নি ঘঠনাস্থলে।
ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছে জেলা টিএমসিপি সম্পাদক শৌভিক চৌধুরীকেও। তবে তাঁর দাবি, “খবর পেয়ে ছাত্রদের সরিয়ে আনতে গিয়েছিলাম।” টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ সিংহের দাবি, “আন্দোলন কলেজে হবে, বাড়িতে কেন? তবে অধ্যক্ষই সমস্যার সমাধান না করে পরিস্থিতি জটিল করেছেন।”
রাতে পার্থবাবু বলেন, “আমি খবর পেয়েছি। রিপোর্ট নিচ্ছি। তার পরেই যা করণীয়, করব।”