বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি, স্বস্তি ফিরল চা-বলয়ে

বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরল উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে শুকিয়ে যাওয়া চা বাগানে পোকার আক্রমণ কমবে বলে মনে করছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:০৬
Share:

বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরল উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে। শনিবার রাত থেকে রবিবার সকাল পর্যন্ত বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিতে শুকিয়ে যাওয়া চা বাগানে পোকার আক্রমণ কমবে বলে মনে করছেন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। যদিও তাঁরা জানান, একটানা কয়েক ঘণ্টা মাঝারি মাপের বৃষ্টি না হলে এ বার চা পাতার উৎপাদন কমে যাওয়ার বিপদ এড়ানো যাবে না।

Advertisement

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের জলপাইগুড়ি কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল পর্যন্ত জলপাইগুড়ি ও লাগোয়া এলাকায় ১৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এর আগে বৃষ্টির অভাবে চা বাগানে রোগ পোকার উপদ্রপ বেড়ে যায় বলে জানা গিয়েছে। ময়নাগুড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় চা গাছ শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা করে পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েন ক্ষুদ্র চা চাষিরা। চাষিরা জানায়, একদিকে খরচ বাড়ছে, অন্যদিকে নতুন পাতার দেখা মিলছে না। ওই পরিস্থিতিতে গত বছরের পাতা উৎপাদনের মাত্রা ধরে রাখা সম্ভব হবে না বলে চাষিরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র ও বড় বাগান থেকে প্রায় ৩১৫ মিলিয়ন কেজি পাতা উৎপাদন হয়েছিল ওই লক্ষ্যমাত্রা এবার ধরে রাখা সম্ভব হবে না। যদিও রবিবার সকালের বৃষ্টির দেখা পেয়ে ক্ষুদ্র চা চাষিদের একাংশ স্বস্তি ফিরে পান। জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “সামান্য হলেও কিছু এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি মিলেছে। চা গাছের ভাল উপকার হবে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে নতুন পাতা গজাবে আরও দু’একদিন বৃষ্টি হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে।”

টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের উত্তরবঙ্গ শাখার মুখ্য উপদেষ্টা শ্যাম বরগিস বলেন, “উত্তরবঙ্গের সর্বত্র বৃষ্টি হয়নি। তবে যে সমস্ত এলাকায় বিক্ষিপ্ত ভাবে হাল্কা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে বেশ কিছু চা বাগান উপকৃত হবে এটা ঠিক, কিন্তু সমস্যা পুরোপুরি মিটবে না।”

Advertisement

চা চাষিরা জানান, প্রতি বছর সরস্বতী পুজো এবং দোলের আগে অথবা পড়ে হালকা বৃষ্টিপাত হলেও এবার জানুয়ারি মাস থেকে উত্তরের বিস্তীর্ণ এলাকার মাটি শুকিয়ে গিয়েছে। কোথাও কৃত্রিম সেচের ব্যবস্থা করে যে কচিপাতার দেখা মিলছে, সেটাও শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। ওই পরিস্থিতি দেখে ক্ষুদ্র চা চাষি, চা গবেষণা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ এবং চা বণিক সভার কর্তাদের মাথায় হাত পড়ে। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে টানা বৃষ্টি না হলে এ বার ডুয়ার্স সহ গোটা উত্তরবঙ্গে সবুজ চা পাতার উৎপাদন কমবে। তবে, শনিবার রাত থেকে আকাশে জলভরা মেঘের ঘনঘটা দেখে চা চাষিরা আশার আলো দেখতে শুরু করেন। যদিও, চা চাষিরা জানিয়েছে, আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ অব ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের সচিব প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, “সব এলাকায় বৃষ্টি হয়নি। কতটুকু এলাকায় হয়েছে, সেটা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন