বাড়তি নিরাপত্তা নিয়ে আজ শুরু কোচবিহারের রাসমেলা

আজ, বৃহস্পতিবার বাড়তি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে কোচবিহারে রাজ-আমলের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা শুরু হতে চলেছে। এ বছর মেলার ২০২ তম বর্ষ।আজ সন্ধে সাড়ে ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ বারের রাসমেলার উদ্বোধন করবেন নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ওই অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া ছাড়াও জেলার একাধিক বিধায়ক, পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:২৮
Share:

আজ, বৃহস্পতিবার শুরু হচ্ছে রাসমেলা। বুধবার সারারাতই চলে তার প্রস্তুতি।

আজ, বৃহস্পতিবার বাড়তি নিরাপত্তার ঘেরাটোপে কোচবিহারে রাজ-আমলের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা শুরু হতে চলেছে। এ বছর মেলার ২০২ তম বর্ষ।

Advertisement

আজ সন্ধে সাড়ে ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এ বারের রাসমেলার উদ্বোধন করবেন নাটাবাড়ির বিধায়ক তথা রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ওই অনুষ্ঠানে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, সভাধিপতি পুষ্পিতা ডাকুয়া ছাড়াও জেলার একাধিক বিধায়ক, পুলিশ ও প্রশাসনের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। এ দিন মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর্ব মেটার পর পাঁজি মেনে রাত ৯টা ১২ মিনিটে মদনমোহন মন্দির চত্বরে রাস উত্‌সবের সূচনা হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা দেবোত্তর ট্রাষ্ট বোর্ডের সভাপতি পি উল্গানাথন দিনভর উপোস থেকে পুরোহিতের পাশে বসে মন্ত্রোচ্চারণ করে, বিশেষ পুজো করে রাসচক্র ঘুরিয়ে ওই উত্‌সবের সূচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। সেখানেও একাধিক ‘ভিআইপি’ উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।

কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “আগে কখনও উপোস থেকে পুজো করে কোন উত্‌সবের সূচনার সুযোগ হয়নি। এই সুযোগ পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই অন্য রকম অনুভূতি হচ্ছে। রাসমেলার নিরাপত্তা বন্দোবস্ত পর্যালোচনার বিষয়ে দু’দফায় বৈঠক হয়েছে। অন্য বছরের তুলনায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে।” রাজ্যের পরিষদীয় সচিব রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “এক সময় মহারাজারা রাসমেলার উদ্বোধন করতেন। জেলার বাসিন্দা হিসাবে এ বার রাসমেলা উদ্বোধনের সুযোগ পেলে তা হবে জীবনের অন্যতম সেরা দিন।”

Advertisement

১৮১২ সালে কোচবিহারের ভেটাগুড়িতে মহারাজা হরেন্দ্রনারায়ণের আমলে প্রথম রাসমেলা অনুষ্ঠিত হয় বলে ইতিহাসে উল্লেখ রয়েছে। সময়ের প্রবাহে ওই মেলা কোচবিহার শহরের মদনমোহন মন্দির লাগোয়া চত্বরে ছড়িয়ে পড়েছে। মেলায় সার্কাস, দু’টো মৃত্যুকূপ, নাগরদোলা, টয়ট্রেন ছাড়াও জিলিপি-সহ রকমারি খাবার, প্রসাধনী সামগ্রী থেকে আসবাবপত্র মিলিয়ে প্রায় তিন হাজার স্টল থাকছে। ইতিমধ্যে জায়গা বন্টনের কাজ শুরু হয়েছে। মেলার আয়োজক কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্য অবশ্য বলেন, “এ বারের রাসমেলার জৌলুস অনেকটা বাড়বে বলে আশা করছি।”

পুলিশ জানিয়েছে, এ বার রাসমেলা ঘিরে অন্য বারের তুলনায় অনেক বেশি কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। গত বছর যেখানে ২২টি ক্লোজড সার্কিট টিভি বসান হয়েছিল, এ বার সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩৫টি করা হয়েছে। গতবারের তুলনায় নজরমিনারের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। মহিলা পুলিশের সংখ্যা দ্বিগুণের বেশি বাড়ানো হচ্ছে। এ ছাড়াও অস্থায়ী থানা, লকআপ, পুলিশ সুপারের দফতর মেলা চত্বরেই থাকছে। সব মিলিয়ে মেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীর সংখ্যা থাকছে এক হাজারের বেশি।

কয়েকদিন আগেই জেলার ঘোকসাডাঙ্গা থানা এলাকায় তাজা বোমা উদ্ধার হয়েছে। গত এক বছরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অন্তত ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার ওপর কোচবিহার সদরের খোলটা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে বাংলাদেশের একাধিক বাসিন্দা সম্প্রতি বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে ধরা পড়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। কোচবিহার শহরে কয়েকমাস আগে ছিনতাইবাজ ও দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য বন্ধে পুলিশের তরফে মোবাইল নম্বর দিয়ে বাসিন্দাদের সহযোগিতা চেয়ে পোস্টার পর্যন্ত দিতে হয়েছে। সে সব কথা মাথায় রেখেই বাংলাদেশ ও অসম লাগোয়া কোচবিহারের মেলা নিয়ে বাড়তি নিরাপত্তার কথা ভাবতে হয়েছে পুলিশকে। জেলা পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব জানিয়েছেন, মহিলা পুলিশ তো বটেই সামগ্রিকভাবে মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের সংখ্যাই বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত মেলা চলবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement