রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজে স্নাতক স্তরে অনলাইন ভর্তির বিরোধিতা থেকে পিছিয়ে এল ছাত্র পরিষদ। বুধবার তারা জানিয়েছে, স্বচ্ছ ভাবে অনলাইনে ভর্তি করা হলে, তা নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। কিন্তু অনলাইনের বদলে সাবেক পদ্ধতিতে হাতে হাতে ফর্ম জমা দিয়ে ভর্তি করতে হবে বলে তারা যে আন্দোলন শুরু করেছিল, তার চাপেই মঙ্গলবার ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তম রায় পদত্যাগ করতে চেয়ে চিঠি দেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমনাথ ঘোষের কাছে। সোমনাথবাবু অবশ্য সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ করেননি।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বুধবার জানিয়েছেন, ওই কলেজে অনলাইনেই ভর্তি হবে। তাঁর বক্তব্য, “কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে অনলাইনের প্রস্তুতি থাকলে তা অনলাইনেই করতে হবে।” উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, উপাচার্য সোমনাথবাবু আজ, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটের সময় ওই কলেজের অ্যাডমিশন কাউন্সিলের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
তার পরের দিন শুক্রবার কলেজে অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার দাবিতে বিকাশ ভবনের সামনে দুপুর ১২টা থেকে বিক্ষোভ দেখাবে বিজেপি-র যুব সংগঠন ভারতীয় জনতা যুব মোর্চা। ওই দিন রাজ্যের প্রতিটি কলেজের সামনেও একই দাবিতে বিক্ষোভ হবে বলে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বুধবার জানিয়েছেন। রাহুলবাবুর অভিযোগ, কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে যে ভাবে ইউনিয়ন-রাজের মাধ্যমে মোটা টাকা তোলা হয়, সেই ব্যবস্থা বজায় রাখার জন্যই নতুন শিক্ষামন্ত্রী সার্বিক ভাবে অনলাইন প্রক্রিয়া বাধ্যতামূলক করা থেকে সরে এসেছেন বলে রাহুলবাবুর অভিযোগ। তাঁর বক্তব্য, “শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের চাপেই আগের শিক্ষামন্ত্রীকে অপসারণ করা হয়েছে। সার্বিক ভাবে অনলাইন ব্যবস্থা চালুর প্রক্রিয়া নাকচ করাই নতুন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম এবং প্রধান কাজ ছিল। উনি তা-ই করেছেন।”
রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের কাছে গিয়ে এ দিন বাম পরিষদীয় দলও অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করার জন্য তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছে। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “রাজ্যপাল অনেকগুলি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। তাই তাঁকে বলেছি, অনলাইনে ভর্তি চালুর জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে সব ঘোষণা করেছিলেন, এখন দেখা যাচ্ছে সে সবই বাগাড়ম্বর ছিল।” তিনি জানান, তাঁদের হিসাব মতো, সাবেক পদ্ধতিতে ভর্তি প্রক্রিয়া চালালে ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবে কিছু লোক।” তারা কারা এই প্রশ্নের জবাবে শাসক দলের দিকেই ইঙ্গিত করেছেন বিরোধী দলনেতা।