শ্মশান সংস্কার নিয়ে তোপ মেয়রকে

কিরণচন্দ্র শ্মশানের সংস্কার নিয়ে মেয়র ‘ভাঁওতা’ দিয়েই চলেছেন বলে অভিযোগ করলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। বিধায়কের অভিযোগ, অন্তত ন’মাস আগে শ্মশানের সংস্কারের জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও, সেই টাকা শিলিগুড়ির বর্তমান পুরবোর্ড অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ করেন রুদ্রনাথবাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩১
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

কিরণচন্দ্র শ্মশানের সংস্কার নিয়ে মেয়র ‘ভাঁওতা’ দিয়েই চলেছেন বলে অভিযোগ করলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। বিধায়কের অভিযোগ, অন্তত ন’মাস আগে শ্মশানের সংস্কারের জন্য বিধায়ক তহবিল থেকে ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও, সেই টাকা শিলিগুড়ির বর্তমান পুরবোর্ড অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছে। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে এই অভিযোগ করেন রুদ্রনাথবাবু।

Advertisement

আগামী সাত দিনের মধ্যে শ্মশান সংস্কারের কাজ শুরু না হলে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিধায়ক। সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার সহ অন্য নেতারাও। সাত দিনের মধ্যে পুরসভা সংস্কারের কাজ শুরু না করলে শ্মশানেই অবস্থানে বসার হুমকি দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জনবাবু। মেয়র অশোক ভট্টাচার্যের পাল্টা যুক্তি, শ্মশানে সংস্কার কাজের প্রক্রিয়া চলেছে। কয়েকটি কাজের জন্য আগ্রহী সংস্থা পাওয়া যাচ্ছে না। মেয়রের দাবি, ‘‘টাকাটা মাত্র ক’দিন আগে পেয়েছি। সরকারি টাকা পেলেই কাজ শুরু করে দেওয়া যায় না। তার একটা প্রক্রিয়া রয়েছে। বিধায়ক টাকা দিয়েছেন। সে জন্য ধন্যবাদ। আগামী দিনেও টাকা দেবেন বলে আশা করছি।’’

মহানন্দা পাড়ে কিরণচন্দ্র শ্মশানের যেখানে শবদেহ রেখে পারলৌকিক কাজকর্ম করা হয়, সেখানে সর্বত্র পশু ও মানুষের বিষ্ঠা ছড়িয়ে থাকে বলে অভিযোগ। ঘাস উঠে যাওয়া অসমান জমিতে শবদেহ রাখা ছাড়া উপায় থাকে না বলেও অভিযোগ। বিধায়ক জানিয়েছেন, এই অবস্থা বদলানোর জন্যই শ্মশানে একটি মার্বেল পাথরের বেদি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। ৬ ফুট লম্বা ও ৩ ফুট চওড়া বেদিটি প্রায় তিন ফুট উঁচু মাপের তৈরি হবে বলে স্থির হয়। সেই সঙ্গে শ্মশানের বর্তমান শৌচাগার সংস্কার এবং দোকান তৈরির জন্য চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয় বিধায়ক তহবিল থেকে। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মাধ্যমে গত বছরের মার্চ মাসে সেই বরাদ্দের আশি শতাংশ অর্থাৎ প্রায় তিন লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা পুরসভার কাছে পৌঁছে যায় বলে বিধায়ক দাবি করেছেন। বিধায়কের অভিযোগ, ‘‘পুরসভা যে বরাদ্দ পেয়েছিল তা অন্য খাতে খরচ করে ফেলেছে। সে কারণেই শ্মশান সংস্কারের কাজ হবে বলে মানুষকে শুধুই ভাঁওতা দিচ্ছেন মেয়র।’’

Advertisement

তাঁর দাবি, কিরণচন্দ্র শ্মশানে পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আরও প্রায় চার লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। সেই বরাদ্দের আশি শতাংশও পুরসভাকে সে সময়ে দিয়ে দেওয়া হয় বলে জানানো হয়েছে। সে সময় পুরসভায় প্রশাসক বোর্ড থাকায় এবং পুরভোটের বিধিনিষেধ বলবৎ থাকায় কর্তৃপক্ষ কাজ করতে পারেনি বলে জানানো হয়। যদিও, গত মে মাসে পুরবোর্ড গঠনের পরে ছ’মাস কেটে গেলেও পুরসভা কেন সংস্কার কাজ করতে পারল না সে প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়ক এবং তৃণমূল কাউন্সিলররা। গত সেপ্টেম্বর মাসে বরাদ্দ নিয়ে জানতে চেয়ে পুরসভাকে চিঠি পাঠালেও কোনও উত্তর পাননি বলে রুদ্রবাবুর অভিযোগ। জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘কয়েকদিন আগে শ্মশান পরিদর্শন করে লোকের কাছে বাহবা কুড়োতে চাইলেন মেয়র। কিন্তু শ্মশান সংস্কারে বিধায়ক তহবিলের টাকা কোথায় গেল তা মেয়রকে জবাব দিতে হবে।’’

পুরভবনে আন্দোলন করায় নিষেধাজ্ঞা জারি নিয়ে গত বৃহস্পতিবারই মেয়রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা সুজয় ঘটক। এ দিন বিধায়ক এবং তৃণমূল জেলা সভাপতি একসঙ্গে মেয়রকে আক্রমণ করেন। বিধায়ককে পাল্টা কটাক্ষ করে মেয়র অশোকবাবু বলেছেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে কড়া কথা বললে যদি কারও বিধানসভা ভোটের টিকিট পাওয়া নিশ্চিত হয় তবে আমার কোনও আপত্তি নেই। এক খাতের টাকা অন্য খাতে কী ভাবে ব্যবহার করা যায়, সেটা তৃণমূল
ভালই জানে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন