শিলান্যাসের পরে আট মাস, স্কুল হয়নি চাঁচলে

মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাসের আট মাস পরেও জমি না মেলায় চাঁচল ২ নম্বর ব্লকে মডেল স্কুল তৈরির কাজ শুরু করতে পারেনি মালদহ জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ব্লকের কোথায় সাড়ে তিন একর জমিতে মডেল স্কুলটি তৈরি হবে, তার জন্য উপযুক্ত জমির খোঁজই মেলেনি। এই অবস্থায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর।

Advertisement

পীযূষ সাহা

মালদহ শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৪ ০২:০২
Share:

মুখ্যমন্ত্রীর শিলান্যাসের আট মাস পরেও জমি না মেলায় চাঁচল ২ নম্বর ব্লকে মডেল স্কুল তৈরির কাজ শুরু করতে পারেনি মালদহ জেলা প্রশাসন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ব্লকের কোথায় সাড়ে তিন একর জমিতে মডেল স্কুলটি তৈরি হবে, তার জন্য উপযুক্ত জমির খোঁজই মেলেনি। এই অবস্থায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূর।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, মালদহ জেলায় ১৫টি ব্লকের মধ্যে কালিয়াচক ১ ও চাঁচল ১ নম্বর ব্লক বাদে জেলার ১৩টি ব্লকে মডেল স্কুলের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ইতিমধ্যে জেলার পুরাতন মালদহ, কালিয়াচক ৩ নম্বর ব্লক ও মানিকচকে তিনটি মডেল স্কুলের কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি রতুয়া ১, হবিবপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকে মডেল স্কুলের কাজ শুরু হতে চলছে। গত ২০১৩ সালে ২৬ নভেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ জেলা সফরে এসে বৃন্দাবনী ময়দানে ৩১টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৫৫টি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এরমধ্যে চাঁচল ২ নম্বর ব্লকের ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে মডেল স্কুলের শিলান্যাস ছিল।

এদিন কংগ্রেস সাংসদ মৌসম বেনজির নূর অভিযোগ করেন, জমি চিহ্নিত না করেই কেন মডেল স্কুল তৈরির সিদ্ধান্ত হল? তিনি প্রশ্ন করেন, জমি যখন ঠিক হয়নি, তখন মুখ্যমন্ত্রীই বা কেন স্কুলের শিলান্যাস করলেন? তিনি অভিযোগ করেন, “মডেল স্কুল কোথায় হবে, সেই জমি চিহ্নিত না করেই কি করে মুখ্যমন্ত্রী মডেল স্কুলের শিলান্যাস করলেন তা বুঝতে পারছি না। লোকসভা ভোটের আগে চমক দেওয়ার জন্যই এসব হয়েছিল। টাকা পড়ে রয়েছে। অথচ প্রশাসন একটা জমি খুঁজে পেল না। রাজ্যে কী হচ্ছে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে।”

Advertisement

এই প্রসঙ্গে বিরক্ত তৃণমূল নেতৃত্বও। কংগ্রেস নেত্রীর মতোই স্কুল তৈরি না হওয়ায় জেলা প্রশাসনকে দুষেছেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, “জমি না মেলাটা প্রশাসনের ব্যর্থতা। জমি না মেলার পরেও কেন শিলান্যাস করানো হল, তা জেলা প্রশাসন বলতে পারবে। জেলাশাসক ও জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকের সঙ্গে দেখা করব। তাঁদের দ্রুত জমি খুঁজে বার করার জন্য বলা হবে।” আর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) আশিস কুমার চৌধুরী বলেন, “জমির সমস্যার জন্যই চাঁচল ২ নম্বর ব্লকে মডেল স্কুল তৈরির কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।”

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, চাঁচল মহকুমা সদর দফতর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে মডেল স্কুলের একটি জমি দেখা হয়েছিল। কিন্তু ব্লক বা মহকুমা সদরের থেকে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে ওই স্কুল তৈরির নিয়ম রয়েছে। তাই ওই জমিটি বাতিল হয়ে যায়। গোটা বিষয়টি প্রসঙ্গে জেলাশাসক শরদ কুমার দ্বিবেদি শুধু বলেন, “ওই মডেল স্কুলের জমি জেলার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক দেখছেন। তিনি তা কী অবস্থা বলতে পারবেন।” এ ব্যাপারে জেলার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক সঞ্জীব চাকি বলেন, “স্কুলের জন্য একটি ৩.৫ একর জমির দরকার। সব নিয়ম মেনে জমি এখনও মেলেনি। খোঁজা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন