—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে দীর্ঘদিন ধরেই শিক্ষক-শিক্ষিকা বদলি নিয়ে টানাপড়েন চলছে। এই অবস্থায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রবিবার দলীয় শিক্ষক সম্মেলনে সাফ জানিয়ে দিলেন, ‘‘বদলিতে কোনও রকম আমরা-ওরা নেই। দলাদলির ব্যাপার নেই। যাদের প্রয়োজন আছে, তাঁদেরই বদলির সুযোগ দেওয়া হবে। আমাদের উপরে আস্থা রাখুন।’’
এই আশ্বাসের আগে অবশ্য কিছু দলীয় শিক্ষক-নেতার একটি বিশেষ অনুরোধকে ঘিরে অসন্তোষ প্রকাশ করেন পার্থবাবু। মন্ত্রীর কাছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির নেতাদের একাংশের অনুরোধ ছিল, শিক্ষক বদলিতে সুপারিশের কিছু ক্ষমতা তাঁদের হাতে দেওয়া হোক। নজরুল মঞ্চে ওই সংগঠনের সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর সামনেই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু বিষয়ী অনুরোধ করেন, অন্তত দু’জন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বদলির সুপারিশের ক্ষমতা সংগঠনের জেলা সভাপতিদের হাতে দেওয়া হোক। তাঁরা দলের ব্লক সভাপতির সঙ্গে কথা বলে বদলির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। তাতে সংগঠনের শক্তি বাড়বে। অন্য এক নেতা বদলির সুপারিশের বিষয়ে নিজেদের ক্ষমতার কথা বলেন। সেই কথায় অসন্তুষ্ট হন শিক্ষামন্ত্রী।
বক্তৃতা দিতে উঠে পার্থবাবু বলেন, ‘‘কে যেন বললেন, তাঁরাই বদলি করে দেবেন! তা হলে তো সরকার চুপচাপ থাকবে। আপনারাই সব করে দিন না। কাকে বদলি করতে হবে, কাকে বেতন বৃদ্ধি করতে হবে, কাকে চাকরি দিতে হবে!’’ তার পরে একটু থেমে মন্ত্রী ফের বলেন, ‘‘ব্যাপারটা অত সোজা নয়। অন্যায়কে ন্যায় বলে প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। সোজা কথা সোজা ভাবেই বললাম।’’ তার পরেই সম্মেলনে উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। কৃষ্ণেন্দুবাবু পরে অবশ্য বলেন, ‘‘মন্ত্রী যা বলেছেন, সেটাই মেনে চলা হবে।’’
বদলি নিয়ে বরাবরই নানান অভিযোগ ওঠে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে। অনেকের অভিযোগ, ন্যায্য বদলি চেয়েও অনেকে বদলি পান না। অথচ কেউ কেউ প্রভাবশালীদের সাহায্যে সহজেই বদলির সুযোগ পান। এই পরিস্থিতিতে এ দিন শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনের নেতারা প্রকাশ্যে বদলির সুপারিশের ক্ষমতা চাওয়ায় বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। মন্ত্রী তখনই আশ্বাস দেন, বদলিতে আমরা-ওরা হবে না। তিনি জানান, প্রাথমিকে অতিরিক্ত শিক্ষক আছেন। নিয়োগের প্রয়োজন নেই। তবে কোথাও ছাত্রছাত্রী খুবই কম, অথচ শিক্ষক বেশি। আবার কোথাও শিক্ষক কম, পড়ুয়া বেশি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরে বদলি ও নিয়োগের প্রক্রিয়া চালানো হবে।