কিছু ক্ষণ পরেই বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তার আগে হাসপাতালের সামনে অনুগামীদের ভিড়। সোমবার দুপুরে। —নিজস্ব চিত্র।
আর কিছু ক্ষণ পরেই খাতায়কলমে জেলমুক্ত হবেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে গত কয়েক মাস ধরেই বাইপাসের ধারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে সেখান থেকেই নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেবেন তিনি।
ইতিমধ্যেই হাসপাতালের সামনে জড়ো হয়েছেন পার্থ-অনুগামী তৃণমূল নেতা-কর্মীদের কয়েক জন। তাঁদের বক্তব্য, পার্থ নিরপরাধ। তাই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জেলমুক্ত হতে চলেছেন তিনি। সরশুনা থেকে আসা এক মহিলার কথায়, “পার্থদা বেহালার রূপকার। উনি বিধায়ক হওয়ার পর বেহালার ভোল বদলে দিয়েছেন।” প্রসঙ্গত, ২০০১ সাল থেকে বেহালা পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক পার্থ।
হাসপাতালের সামনে ভিড় পার্থ-অনুগামীদের। —নিজস্ব চিত্র।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পায়ের সমস্যায় কাবু পার্থ এখন আগের তুলনায় খানিক সুস্থ রয়েছেন। গাড়িতে চেপেই বাড়ি ফিরবেন তিনি। পার্থকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হাসপাতালে গিয়েছেন তাঁর ঘনিষ্ঠজনেরা। এই ঘনিষ্ঠজনেদের কয়েক জনকে একাধিক বার আদালতে শুনানির সময় হাজির থাকতে দেখা গিয়েছে। পার্থকে হাসপাতাল থেকে আনতে গিয়েছেন কলকাতা পুরসভার ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল সভাপতি সুজিত চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি বলেন, “দলীয় পদাধিকারী হিসাবে নয়, পার্থদার সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্কের কারণেই আমার যাওয়া। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।” পার্থকে বাড়িতে ফেরাতে বাইকে চেপে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক জন তৃণমূলকর্মীও। নাকতলা থেকে একটি ম্যাটাডর ভাড়া করেও কয়েক জন গিয়েছেন। বেলা বাড়তেই হাসপাতাল চত্বরে অনুগামীদের ভিড় ক্রমশ বাড়ছে। তবে তুলনায় পুলিশের সংখ্যা কম। ভিড় নিয়ন্ত্রণের কাজ করছেন হাসপাতালের নিরাপত্তারক্ষীরাই।
নাকতলা থেকে বাইক নিয়ে পার্থকে আনতে গেলেন অনুগামীরা। —নিজস্ব চিত্র।
নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কয়েক মাস আগেই বলে দিয়েছিল যে, সিবিআইয়ের মামলায় বিচারপর্ব শুরু হলেই পার্থ, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করা যাবে। ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চূড়ান্ত জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। সেইমতো সোমবার ওই মামলায় অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। তার পর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পার্থকে জেলমুক্ত করার নির্দেশ দেন। তার পর আদালতের এই সংক্রান্ত নথি পৌঁছোয় প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখান থেকে নথি যায় হাসপাতালে।