Partha Chatterjee

বরণ করে ঘরে তোলা হল পার্থকে, উঠল ‘জিন্দাবাদ’ স্লোগান, আত্মীয়দের দেখে চোখে জল জেলমুক্ত প্রাক্তন মন্ত্রীর

পায়ের সমস্যায় কাবু পার্থ এখন আগের তুলনায় খানিক সুস্থ রয়েছেন। গাড়িতে চেপেই নাকতলার বাড়ি ফিরলেন তিনি। নিকটাত্মীয়দের দেখে কেঁদে ফেলেন পার্থ। বরণ করে তাঁকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:২৭
Share:

আত্মীয়দের দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

জেলমুক্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সোমবার। সেই মতো মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তি পেলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। দুপুর ২টো ২০ নাগাদ বাইপাসের ধারের হাসপাতাল থেকে হুইলচেয়ারে চেপে বাইরে বেরিয়ে আসেন তিনি। তিনি বেরিয়ে আসতেই হাসপাতাল চত্বরে আগে থেকে ভিড় করা অনুগামীরা স্লোগান তোলেন ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’। এই সব দৃশ্য দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। কেঁদে ফেলেন তিনি। তবে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের উত্তরে কিছু বলেননি তিনি। অসম্মতিসূচক ঘাড় নেড়ে বুঝিয়ে দেন, তিনি কোনও উত্তর দিতে চান না।

Advertisement

নীলের উপর সাদা ফুলছাপ পাঞ্জাবি পরে বাইরে বেরোন পার্থ। তাঁর মুখে ছিল নীলরঙা মাস্ক। আগে থেকেই প্রস্তুত ছিল গাড়ি। চালকের পাশের আসনে বসে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন পার্থ। গাড়ির সঙ্গেই ছুটতে থাকেন পার্থ-অনুগামীরা। ভিতরে বসে হাত জোড় করে নমস্কার জানাতে দেখাতে যায় তাঁকে। ভিড় কাটিয়ে নাকতলার বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় পার্থের গাড়ি। পার্থকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে সকাল থেকেই তাঁর বহু অনুগামী বাইক নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পার্থের গাড়ির পিছনে বাইক নিয়ে নাকতলা যান তাঁরা।

হাসপাতাল থেকে বেরোচ্ছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

বরণ করে পার্থকে বাড়িতে নিয়ে যান তাঁর আত্মীয়রা। বরণ করেন পার্থের ভাইয়ের স্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন পার্থের ভাই এবং তাঁর কন্যা। পার্থ বাড়িতে ঢোকার পর সদর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘ দিন পর বাড়ি ফিরে নিকটাত্মীয়দের দেখে আবেগতাড়িত হয়ে কেঁদে ফেলেন পার্থ। তাঁকে সান্ত্বনা দেন ভাইয়ের মেয়ে। বাড়ির ভিতরে ঢুকেই মামা, প্রয়াত গীতিকার শিবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্মরণ করেন পার্থ। বাড়ির সামনেও ‘পার্থদা জিন্দাবাদ’ বলে স্লোগান দেন অনুগামীরা। কবে বেহালায় পা রাখছেন, অনুগামীদের তরফ থেকে জানতে চাওয়া হয়।

Advertisement

পার্থের আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী জানিয়েছেন, পরবর্তী সময়েও প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ করবেন তাঁর মক্কেল। আপাতত চিকিৎসকেরা তাঁকে কয়েক দিন বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। পার্থ ফেরার পরেই নাকতলার বাড়িতে যান বেহালা পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রের তাঁর কয়েক জন অনুগামী। ভিড়ের চাপ এড়াতে আপাতত কাউকে বাড়ির ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

তিন বছর তিন মাস ১৯ দিন পর নিজের বাড়িতে ফিরলেন পার্থ। নিয়োগ মামলায় ২০২২ সালের ২৩ জুলাই কলকাতার নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট কয়েক মাস আগেই বলে দিয়েছিল যে, সিবিআইয়ের মামলায় বিচারপর্ব শুরু হলেই পার্থ, এসএসসির তৎকালীন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য ও উপদেষ্টা শান্তিপ্রসাদ সিংহের শর্তাধীন জামিন মঞ্জুর করা যাবে। ১৪ নভেম্বরের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করে চূড়ান্ত জামিন মঞ্জুর করার নির্দেশও দেয় শীর্ষ আদালত। সেই মতো সোমবার ওই মামলায় অষ্টম সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব শেষ হয়। তার পর আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক পার্থকে জেলমুক্ত করার নির্দেশ দেন। তার পর আদালতের এই সংক্রান্ত নথি পৌঁছোয় প্রেসিডেন্সি জেল কর্তৃপক্ষের কাছে। সেখান থেকে নথি যায় হাসপাতালে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement