চাষ: ব্ল্যাক রাইস। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার মাউসে ক্লিক করেই ঘরে বসে মিলবে কোচবিহারের ব্ল্যাক রাইস। কালো রঙের ওই চাল অনেকের কাছেই ‘কালোভাত’ নামে পরিচিত। সুগন্ধি ওই চাল পুষ্টিগুণ, আয়রন সমৃদ্ধ শুধু নয় ক্যান্সার প্রতিরোধেরও অনেক বেশি সহায়ক বলে গবেষকদের একাংশের দাবি। সব মিলিয়ে ব্ল্যাক রাইসের চাহিদাও ক্রমশ বাড়তে শুরু করেছে। ক্রেতাদের ওই চাল কিনতে সুবিধে দেওয়া থেকে কৃষকদের বিপণনের সুযোগ বাড়াতে অনলাইনে ওই চাল বিক্রির পরিকল্পনা পাকা হয়ে গিয়েছে।
কৃষি দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, সাতমাইল এলাকার একটি ফার্মার্স ক্লাব কৃষি দফতরের পাশাপাশি নাবার্ডের সহযোগিতা নিয়ে ওই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকেই অনলাইনে ব্ল্যাক রাইসের বিক্রির ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।
কোচবিহারের মুখ্য কৃষি আধিকারিক বুদ্ধদেব ধর বলেন, “জেলায় কোচবিহার ১ ব্লকেই মূলত ব্ল্যাক রাইসের চাষ হচ্ছে। অনলাইনে ওই চাল বিক্রির বন্দোবস্ত করার ব্যাপারে একটি ফার্মার্স ক্লাব আগ্রহ দেখিয়েছে।” ওই ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, “সংস্থার ওয়েবসাইটে ব্ল্যাক রাইস সহ দেশি প্রজাতির বেশ কিছু চালের প্রচার করা হবে। আগ্রহীরা নিয়ম মেনে যোগাযোগ করলে ক্যুরিয়রের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই চাল পেয়েও যাবেন।”
আরও পড়ুন:বন্ধের চোটে ‘বেপাত্তা’ বাঘ
কৃষি দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে ব্ল্যাক রাইসের চাষ সফল হয়েছে। এ বছর ওই প্রজাতির ধান চাষের এলাকাও অনেকটা বেড়েছে। নভেম্বর মাস নাগাদ ফলন তুলতে পারবেন চাষিরা। ফলন তোলার পরে এ বারের মরসুমে কোচবিহারে উৎপাদিত ওই ‘ব্ল্যাক রাইস’ অনলাইনে বিক্রির ব্যবস্থা করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। কোচবিহার ১ ব্লকের কৃষি আধিকারিক রজত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেওয়ানহাট, জিরানপুর, ঘুঘুমারি ও লাগোয়া এলাকাতে ব্ল্যাক রাইস চাষ হচ্ছে। তাঁদের ব্লকে ৩ হেক্টর এলাকায় ব্ল্যাক রাইস চাষ হয়েছে। গত বছর ২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়। উৎপাদন বেড়ে অন্তত ১ মেট্রিক টন হবে বলে আশা করছি। অনলাইনে চাল বিক্রির জন্য কৃষকদের উৎপাদক সংস্থার নাম নথিভুক্তির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
দফতর সূত্রেই জানা গিয়েছে, সুফল বাংলার স্টল ও সমবায়িকায় প্যাকেটজাত করে ওই চাল বিক্রির চেষ্টাও হচ্ছে। এতে উৎসাহ বেড়েছে চাষিদেরও। দেওয়ানহাটের বাসিন্দা এক কৃষক আজগর আলি বলেন, “বিঘায় গড়ে ৯ মণ ফলন হয়। গতবার স্থানীয় বাজারে ১০০ টাকা প্রতি কেজি দাম পেয়েছি। অনলাইন বিক্রির ব্যবস্থা হলে চাহিদা বাড়বে, আশা করি দামও বেশি পাব।’’ এক কৃষিকর্তার দাবি, পায়েস, খিচুরির জন্যও ওই চাল সাদা চালের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকবে।