আসিকুর কি খুন হয়েছেন, ধন্দ ভাঙড়ে

ময়নাতদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আসিকুরের কপালের ডান দিকে কার্তুজের ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ক্ষতের চারদিকের চামড়া ঝলসে গিয়েছে। ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে গুলিটি লাগে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

ভাঙড় শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৪:৪২
Share:

গুলিবিদ্ধ আসিকুরকে নিয়ে হাসপাতালে। ছবি: সামসুল হুদা।

থানায় দায়ের হয়েছে খুনের অভিযোগ। কিন্তু ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আসিকুর রহমান ওরফে বাবুসোনা কী ভাবে ‘খুন’ হলেন, ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরে, সোমবারেও সেই ধন্দ কাটল না পুলিশের।

Advertisement

রবিবারই কাঁটাপুকুর মর্গে বাবুসোনার দেহের ময়নাতদন্ত হয়। ময়নাতদন্তকারীরা জানিয়েছেন, আসিকুরের কপালের ডান দিকে কার্তুজের ক্ষতচিহ্ন রয়েছে। ক্ষতের চারদিকের চামড়া ঝলসে গিয়েছে। ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’ থেকে গুলিটি লাগে। তাঁর কপালের ডান দিক থেকে হাড়-মাংস উড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: অষ্ট-আশিতে এসে বিয়ে! মতলবটা কী, প্রশ্ন বিচারপতির

Advertisement

কয়েক ফুট দূর থেকেও কেউ গুলি করলে আসিকুরের কপালের ওই অবস্থা হতো না বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। রবিবারই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছিলেন, দলবল নিয়ে ওই সকালে নতুনহাট বাজারে জড়ো হয়েছিলেন আসিকুর। নিজেদের আগ্নেয়াস্ত্র থেকেই কোনও ভাবে গুলি ছিটকে লেগে মৃত্যু হয় ওই তৃণমূল নেতার। কিছু তৃণমূল নেতা স্বীকার করেছেন, রবিবার নতুনহাট বাজারে তাঁদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হাজির হন পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের মিছিল ভেস্তে দিতে। ছিলেন আসিকুরও। ফলে, সবাইকে টপকে কী ভাবে হামলাকারী আসিকুরের কাছে ‘পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ’-এ পৌঁছে গেল, সে প্রশ্ন থাকছেই।

জেলা পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন, বাবুসোনার ভাই মাফাজুর রহমানের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে হাকিবুল অবশ্য সোমবারও দাবি করেছেন, আন্দোলনকারীদের হাতেই খুন হন আসিকুর।

রবিবার বিকেলে আন্দোলনকারীরা বকডোবা থেকে পাওয়ার গ্রিড এলাকা পর্যন্ত মিছিল করে। ওই মিছিল যাতে না হয়, সে জন্য কয়েক দিন ধরেই আরাবুল বাহিনী ওই এলাকায় বোমাবাজি করছিল বলে অভিযোগ। ওই সকালে নতুনহাট বাজারের কাছেও বোমাবাজি হয়। এর কিছুক্ষণ পরেই রাস্তার মধ্যে আসিকুরের কপালে একটি গুলি এসে লাগে। জিরেনগাছি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ জানান, ওই সকালে রাজারহাট, শোনপুকুর, মাছিভাঙা, উড়িয়াপাড়া, গাজিপুর, নিউটাউনের লস্করহাটি, পাঁচুড়িয়া, খয়েরপুর এলাকার তৃণমূল নেতারা সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে নতুনহাটে হাজির হন। সকাল ১০টা নাগাদ আরাবুল ঘনিষ্ঠ বাবুসোনাও শানপুকুর এলাকা থেকে নিজের বাহিনী নিয়ে আরাবুলের কাছে আসেন। লস্করহাটির এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘বাবুসোনা এসেই আরাবুল ভাইকে বলেছিলেন, ‘দাদা আমি একাই একশো। তোমার কোনও চিন্তা নেই। এমন তাণ্ডব করব, বিকেলে মিছিল বের হবে না’। বাবুসোনা একটি চেয়ারে বসেছিলেন। সাড়ে ১০ নাগাদ হঠাৎ গুলির শব্দ। মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়ে যান বাবুসোনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন