Siliguri

Crime: ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই শিলিগুড়ির জমি মাফিয়াকে গুলি, দাবি পুলিশের, আটক দুই

বিদ্যুতের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি, যে কার্যালয়ে বিদ্যুতের উপর হামলা হয়, সেটি তাঁর অফিস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ অগস্ট ২০২২ ২১:৫৮
Share:

শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ সাহা। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ সাহাকে জমি মাফিয়া চক্রের অন্যতম পান্ডা বলে দাবি করল পুলিশ। সেই কারবারে শত্রুতার জেরেই সোমবার তাঁর উপর গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছে। বিদ্যুতের উপর হামলার ঘটনায় এমনই দাবি করল পুলিশ। এই হামলার ঘটনায় তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর দুই সন্দেহভাজনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও তাঁদের নাম-পরিচয় প্রকাশ্য আনা হয়নি।

Advertisement

স্বাধীনতা দিবসের রাতে শিলিগুড়ির ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের সুকান্তনগরে বিদ্যুৎকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় কালো কাপড়ে মুখঢাকা দুষ্কৃতীরা। এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত বিদ্যুৎ সে সময় বাড়ির পাশে দলীয় কার্যালয়ে বসেছিলেন। হামলার পর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচারও করা হয়েছে।

পুলিশের দাবি, শিলিগুড়িতে জমি মাফিয়া চক্রের অন্যতম পান্ডা বিদ্যুৎ৷ তাঁর দলও রয়েছে। বিদ্যুতের নির্দেশেই এলাকার জমি এক হাত থেকে অন্য হাতে হস্তান্তর হয়। আশিঘর, বাইপাস সংলগ্ন বিভিন্ন জমি কাণ্ডেও বিদ্যুতের নাম জড়িয়েছে। একাধিকবার তেমন কাণ্ডে গ্রেফতারও হয়েছেন। এমনকি, মাস দুয়েক আগে জমি মাফিয়াদের ধরপাকড়ের সময় তাঁকে গ্রেফতার করেন আশিঘর পুলিশ ফাঁড়ির আধিকারিকেরা। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। বছরখানেক আগেও জমির সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রেফতার হন বিদ্যুৎ।

Advertisement

শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীর উপর হামলার ঘটনায় তদন্তে পুলিশ আধিকারিকেরা। —নিজস্ব চিত্র।

বিদ্যুতের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়েও ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এলাকাবাসীদের দাবি, যে কার্যালয়ে বিদ্যুতের উপর হামলা হয়, সেটি তাঁর অফিস। পাশাপাশি, সেটি তৃণমূলের এলাকার পার্টি অফিস। যদিও তৃণমূলের সঙ্গে বিদ্যুতের তেমন সম্পর্ক নেই বলে সাফ জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর। ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘ভোটের সময় বিদ্যুৎ সাহার অফিসকে ক্যাম্প অফিস হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল ঠিকই। এই রাস্তার উপর দিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে হয়েছিল সকলকে। কাজেই সেটাকেই ক্যাম্প অফিস করা হয়। এ ছাড়া আর কিছু না। তবে বিদ্যুৎ তৃণমূলের কর্মী নন, সমর্থক।’’

বিদ্যুতের উপর হামলার ঘটনায় সোমবার রাত থেকে তদন্তে নেমেছে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের ভক্তিনগর থানা, আশিঘর পুলিশফাঁড়ি, গোয়েন্দা বিভাগ-সহ স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ।

এই হামলা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ বিদ্যুতের পরিবার। তবে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই যে এমন পরিণতি, তা মনে করেন দুলাল। তিনি বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করে দেখছে৷ তবে ব্যবসায়িক শত্রুতার জেরেই এমন ঘটেছে তা সহজেই বোঝা যাচ্ছে। তবে এর আগে আমার এলাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি।’’

পুলিশ সূত্রে খবর, এই হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে বিদ্যুতের পরিবার। বিদ্যুতের বিরোধী গোষ্ঠীর দু’জন সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে যারা গুলি চালিয়েছে, তাদের হদিস এখনও মেলেনি। সোমবার রাতেই বিদ্যুতের বাড়ির পাশে ঘুঘুমালী এলাকা থেকে ওই দু’জনকে আটক করা হয়। সেই সঙ্গে এলাকায় তল্লাশিও চলছে। দুপুরের দিকে আবারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। যে অফিসে হামলার ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি সিল করে দেওয়া হয়েছে।

অন্য দিকে, সোমবার রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিদ্যুতের অস্ত্রোপচার হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন