নাম না করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগের জবাব দিল কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ। ফাইল ছবি।
কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের সময় কোতোয়ালি থানার আইসির বিরুদ্ধে উৎসবে অংশগ্রহণকারী মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ এনেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নিজের সমাজমাধ্যমে কোতোয়ালি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের লাঠিহাতে বিসর্জনের সময়ের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন। সেই ভিডিয়ো পোস্ট করে শুভেন্দু লেখেন, ‘‘কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের মুহূর্তে হিন্দুদের উপর অন্যায় নির্যাতন চালানোর সময় কোতোয়ালি থানার আইসি অমলেন্দু বিশ্বাসের মুখের ভাষা থেকেই বোঝা যায় যে হিন্দুদের কী চোখে দেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ প্রশাসন!’’ বিজেপি নেতার নাম না করে নিজেদের জবাবে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ বিবৃতি দিয়ে জানায়, মহিলাদের উত্ত্যক্ত করা এবং হেনস্থার ঘটনা রুখতেই পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে ঘটনায় সাম্প্রদায়িক রং লাগানো অনভিপ্রেত। সেই সঙ্গে তাঁর অভিযোগও খারিজ করে দিয়েছে পুলিশ।
ওই ভিডিয়োতে বিসর্জনে অংশগ্রহণকারীদের উপর পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে দেখা যায়। সঙ্গে আইসি অমলেন্দুকে বেশকিছু আপত্তিকর শব্দও বলতে শোনা যায়। যদিও ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। পাশাপাশি ওই ভিডিয়ো নিয়ে বিরোধী দলনেতা অভিযোগ করেন, ‘কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে. বিসর্জনের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নাগরিক সুরক্ষার আশ্বাস দিলেও পুলিশ ব্যর্থ। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে জনগণকে লাঠিপেটা করেছে মমতার পুলিশ। অমরনাথ কে. ও অমলেন্দু বিশ্বাস দু’জনেরই অদক্ষতা প্রমাণিত ও এদের রেকর্ড হল প্রাতিষ্ঠানিক তোলাবাজি। জনগণের স্বার্থের থেকে নিজের স্বার্থ এদের কাছে অনেক বেশি অগ্রাধিকার পায়। এই ভাষায় মানুষকে অপমান করার অধিকার এদের কে দিয়েছে?’’
জবাবে কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশের তরফে এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে লেখা হয়, ‘‘২০২৫ সালের ৩১ অক্টোবর কৃষ্ণনগর জুড়ে জগদ্ধাত্রী পূজার বিসর্জন শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে, বড় কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। দুই দিন ধরে চলা এই শোভাযাত্রায় ২০০-রও বেশি প্রতিমা অংশ নিয়েছিল। একমাত্র গোলমালের ঘটনা ঘটে কদমতলা ঘাটে, যেখানে চোকেরপাড়া ক্লাবের সদস্যেরা মহিলা পুলিশ কর্মীদের উত্ত্যক্ত ও হেনস্থা করার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ হালকা লাঠিচার্জ করে দুষ্কৃতীদের ছত্রভঙ্গ করে শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপন করে। চোকেরপাড়া ক্লাবের অতীতেও বিসর্জন শোভাযাত্রার সময় সহিংসতা ও সরকারি সম্পত্তি নষ্টের অভিযোগ রয়েছে।’’ এই ঘটনায় কোতয়ালি থানায় ০১.১১.২০২৫ তারিখে মামলা নং ১১৯৮/২০২৫ দায়ের হয়েছে। মামলাটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৬১(২), ৭৪, ৭৫, ৭৬, ৭৯, ১২৬(১), ১৩২, ১৩৩ ও ৩৫১(২)-এর অধীনে রুজু হয়েছে বলেও দাবি জেলা পুলিশের। পাশাপাশি, তাদের আরও বক্তব্য, এই আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত।