এইচআইভি রুখতে ওষুধ শুধু সতর্কতা

ধূমপানের কুফল সম্পর্কে চিকিৎসক সব চেয়ে বেশি সচেতন, তবু অনেক ডাক্তারই নিজের অভ্যেস বদলে ধূমপান বন্ধ করেন না। তাই শুধু সচেতনতা যথেষ্ট নয়, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:৩১
Share:

ধূমপানের কুফল সম্পর্কে চিকিৎসক সব চেয়ে বেশি সচেতন, তবু অনেক ডাক্তারই নিজের অভ্যেস বদলে ধূমপান বন্ধ করেন না। তাই শুধু সচেতনতা যথেষ্ট নয়, জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা জরুরি। এইচআইভি সংক্রমণের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। সচেতনতা প্রাথমিক পদক্ষেপ নিশ্চয়ই। তবে সেই সচেতনতাকে জীবনযাপনে কাজে লাগানোটাই আসল ব্যাপার। সোমবার কলকাতার আমেরিকান সেন্টারে এইচআইভি সচেতনতার এক অনুষ্ঠানে এই সওয়ালই করলেন বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি জানালেন, এইচআইভি সংক্রমণ রুখতে সব চেয়ে বেশি প্রয়োজন এই রোগ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে গেঁথে থাকা ভুল ধারণা দূর করা। সেই সঙ্গে তিনি আঙুল তুললেন রাজ্যে অবাধ অনুপ্রবেশের দিকে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘জীবনযাপনে স্বাচ্ছন্দ্যের দাবিতে অনুপ্রবেশ তো নতুন নয়। বহু বছর ধরেই চলছে। কিন্তু শারীরিক পরীক্ষাটাও যে অত্যন্ত জরুরি।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্রেগ হল, রোটারি ক্লাবের ডিস্ট্রিক্ট গভর্নর শ্যামশ্রী সেন, দুর্বার সংগঠনের মুখ্য উপদেষ্টা ও চিকিৎসক স্মরজিৎ জানা প্রমুখ। সংক্রমণের বিভিন্ন ‘কেস হিস্ট্রি’-তে বারবার উঠে এল এ রাজ্য থেকে বাইরে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের কথা, যাঁরা নিজেদের অজান্তেই অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গের মাধ্যমে নিজের ঘরে বয়ে এনেছেন সংক্রমণ। অনেক ক্ষেত্রে স্ত্রী-সন্তান হয়ে সেই সংক্রমণ বাহিত হয়ে চলেছে প্রজন্মের পর প্রজন্মে। রাজ্যের অন্যতম যৌনপল্লি, কলকাতার সোনাগাছিতে কর্মীরা আজও কতটা অসুরক্ষিত ভাবে কাজ করেন, উঠে এল সেই প্রসঙ্গও। মন্ত্রী জানালেন, সরকারি তরফে বিনামূল্যে কন্ডোম দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও তার ব্যবহারের অভ্যেসটা ব্যক্তিগত ভাবেই মানুষকে করতে শিখতে হবে।

Advertisement

‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’-এর ডেপুটি ডিরেক্টর সমীরণ পাণ্ডা দু’টি ছোট তথ্যচিত্র দেখালেন। সেখানে পশ্চিম মেদিনীপুরের দু’টি গ্রামের ছবি উঠে এল, যেখানে এইচআইভি আক্রান্ত লোকজন এবং সুস্থ মানুষ পাশাপাশি বাস করেন, কাজ করেন। তথ্য বলছে, ওই দু’টি গ্রামের অনেক পুরুষই দীর্ঘ কাল ধরে পশ্চিম ভারতে স্বর্ণকারের কাজ করে আসছেন। এবং দীর্ঘ কাল ধরেই ছড়িয়েছে এই সংক্রমণ।

তবে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগে সেখানে এখন পাশাপাশি কাজ করছেন ওই রোগে আক্রান্ত মানুষ এবং অন্য বাসিন্দারা। ছোঁয়াছুঁয়িও করছেন নির্ভয়ে। এমনি করেই সংক্রমণ নিয়ে অহেতুক ভয় ভাঙছে ওই সব প্রত্যন্ত গ্রামে। বাসিন্দারা শিখছেন, ছুঁলেই সংক্রমণ হয় না। এবং শিখে রাখছেন, কী কী কারণে হতে পারে সংক্রমণ। ‘‘শিক্ষার এই আলোটুকুই এইচআইভি-সচেতনতার প্রথম ধাপ,’’ বললেন সমীরণবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন