চিকিৎসায় সেবাতেই জোর মমতা-প্রণবের

চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগই এ বার উঠে এল রাষ্ট্রপতির মুখে। চিকিৎসকদের একাংশের অমানবিকতা এবং চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নামে কিছু বেসরকারি হাসপাতালের অসাধু ব্যবসা নিয়ে সরব হলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

পাশাপাশি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়। সোনারপুরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ সায়েন্সেস-এর অনুষ্ঠানে। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগই এ বার উঠে এল রাষ্ট্রপতির মুখে। চিকিৎসকদের একাংশের অমানবিকতা এবং চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার নামে কিছু বেসরকারি হাসপাতালের অসাধু ব্যবসা নিয়ে সরব হলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। এগুলি বন্ধ করতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ভাবে উদ্যোগী হয়েছেন, তারও প্রশংসা করেছেন রাষ্ট্রপতি। বৃহস্পতিবার সোনারপুরে ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড ডাইজেস্টিভ সায়েন্সেস’-এর অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি এবং মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই মমতার নেতৃত্বে স্বাস্থ্য ও শিক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ এগিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রণববাবু।

Advertisement

চিকিৎসা নিয়ে অসাধু ব্যবসা বন্ধ করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছেন মমতা। সেই প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘অভিযোগ আসছে, বিভিন্ন হাসপাতাল সেবা বিক্রি করছে। অনেক বেশি লাভ করার জন্য অনেক বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল, ডাক্তার এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে, আলোচনা করে একটা সমাধান সূত্র বার করছেন। অনেক কাজ করছেন।’’

বেসরকারি হাসপাতাল মানেই কম টাকায় পরিষেবা দেওয়া যাবে না, এমনটা নয় বলে জানিয়ে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘সেবার বিকল্প হয় না। চিকিৎসা দেওয়ার সঙ্গে একটু মিষ্টি কথা, ভালবাসা ও মানবিকতা অনেক বেশি ফল দেয়। হাসিমুখে কাজ করুন, মানুষ আপনাদের অনেক বেশি গ্রহণ করবে।’’ তাঁর পরে বলতে উঠে রাষ্ট্রপতি বলেন— ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ওঁর কথার গোড়াতেই জোর দিয়েছেন সেবার উপর। প্রবাদই রয়েছে— চিকিৎসকের হাসিমুখ দেখেই অর্ধেক রোগ সেরে যায়!’’

Advertisement

তবে কথায়-কথায় হাসপাতাল ভাঙচুর, ডাক্তারকে মারধর এবং চিকিৎসার খরচ এড়ানোর ফিকির খোঁজার মানসিকতা থেকে মানুষকেও বেরিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন রাষ্ট্রপতি। তিনি বলেন, ‘‘রোগী মারা গেলেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল ভাঙচুর এবং ডাক্তারকে মারধর করা হবে, এটা কোনও কাজের কথা নয়। চিকিৎসক তাঁর অভিজ্ঞতা, শিক্ষা, যোগ্যতা ও দক্ষতা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করার সব রকম চেষ্টা করেন। তবে তার পরেও রোগী যে বাঁচবেই, এমন গ্যারান্টি কেউ দিতে পারে না। তা ছাড়া চিকিৎসার একটা ব্যয়ভার রয়েছে। সেটা বহন করার দায়িত্ব তো নিতেই হবে।’’

যে হাসপাতালের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি এসেছিলেন, তার তরফে চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরী এ দিন দাবি করেছেন, রোগী এক রকম আর্থিক অবস্থা নিয়ে হাসপাতালে ঢুকলেন এবং চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে আর এক রকম আর্থিক অবস্থা নিয়ে হাসপাতাল থেকে বেরোলেন— এটা যেন কোনও ভাবে না হয়, সেই শপথ নিয়েই তাঁরা পথ চলতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন