জোরকদমে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। দুর্গাপুরে। ছবি: বিকাশ মশান
জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধীর পরে নরেন্দ্র মোদী। আজ, শনিবার চতুর্থ বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী পা রাখছেন দুর্গাপুরে। সেই উপলক্ষে শুক্রবার থেকেই কড়া নিরাপত্তা-বলয়ে নেহরু ও এএসপি স্টেডিয়ামের চারপাশ।
শহরের প্রবীণেরা জানান, এর আগে ১৯৮৬-র ২০ সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। তার ৩২ বছর বাদে ফের দেশের প্রধানমন্ত্রী এই শহরে। ইতিমধ্যেই বায়ুসেনার কপ্টার বেশ কয়েক বার চক্কর মেরেছে শহরের আকাশে। নেমেছে এএসপি স্টেডিয়ামে। শনিবার দুপুরে তিনটি কপ্টার এক সঙ্গে নামবে এএসপি স্টেডিয়ামে।
শনিবার যেখানে সভা হওয়ার কথা সেই নেহরু স্টেডিয়ামে শুক্রবার গিয়ে দেখা গেল পশ্চিম প্রান্তে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মাঠে বাঁশ দিয়ে ছোট ছোট জায়গা জুড়ে বহু ব্যারিকেড তৈরি করা হয়েছে। স্টেডিয়ামের ‘ফেন্সিং’ দলীয় পতাকায় মুড়ে দিয়েছে বিজেপি। এ দিন স্টেডিয়াম জুড়ে পুলিশের উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। বাইরে পাহারায় রয়েছে এসপিজি। রাহুল সিংহ-সহ বিজেপির নেতারা সভা মাঠের প্রস্তুতি দেখে যান। রাহুলবাবু বলেন, ‘‘শুরুতে অসহযোগিতা করলেও শুক্রবার থেকে পুলিশের সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি।’’ জাতীয় সড়ক থেকে স্টেডিয়ামগামী মহাত্মা গাঁধী রোডে লাগানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতাদের কাটআউট।
আরও পড়ুন: শিল্প-কথার আশায় জেলা
তবে সেই সঙ্গে রাহুলবাবুর অভিযোগ, ‘‘স্টেডিয়ামে আসার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে দলীয় কর্মীদের বাধা দেওয়ার জন্য অযথা ভিড় তৈরির চক্রান্ত শুরু করেছে তৃণমূল। কাঁথির মতো ঘটনা যাতে প্রধানমন্ত্রীর সভার আগে-পরে না ঘটে, তা পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান রাহুলবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘রাজনৈতিক সভা হলেও দেশের প্রধানমন্ত্রী সেই সভায় যোগ দিচ্ছেন। তাই বিরোধী দলের মেয়র ও কাউন্সিলরদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সভায় থাকার জন্য।’’ আসানসোল-দুর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সভা ঘিরে আইন অনুযায়ী সমস্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে। আমরা সব রকম ভাবে তৈরি। কোনও রকম বিশৃঙ্খলা হবে না।’’
তবে ভিড় করার ‘চক্রান্ত’-এর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিজেপির দলীয় অনুষ্ঠান। সেখানে কাউন্সিলরেরা কেন যাবেন? সরকারি অনুষ্ঠান হলে নিশ্চয়ই ভাবা যেত। কোনও রকম চক্রান্তের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’ যদিও শনিবার সভা ছাড়াও পূর্ব রেলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা প্রধানমন্ত্রীর। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ মমতাজ সঙ্ঘমিতাকেও। সাংসদ সেই অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই অনুষ্ঠানে অণ্ডাল-সাঁইথিয়া-পাকুড়-মালদহ ও খানা-সাঁইথিয়া রুটের ২৯৪ কিলোমিটার বৈদ্যুতিন লাইনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়াও খড়গপুর-নারায়ণগড় তৃতীয় লাইনেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। এর পরে প্রধানমন্ত্রী দিল্লি ফিরে যাবেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।