Amartya Sen

অমর্ত্যকে উচ্ছেদ-নোটিসের প্রতিবাদে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিশ্বভারতী! দ্বারস্থ জেলা প্রশাসনের

ক্যাম্পাসের ভিতর এত সংখ্যায় প্রতিবাদ সভা এবং সমাবেশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই এ বার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০২৩ ২৩:১৬
Share:

অমর্ত্য সেন। ফাইল ছবি।

অমর্ত্য সেনকে ধরানো বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ সংক্রান্ত নোটিসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে শুক্রবার থেকে শান্তিনিকেতনে লাগাতার কর্মসূচির ডাক দিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। ক্যাম্পাসের ভিতর এত সংখ্যায় প্রতিবাদ সভা এবং সমাবেশ হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। সেই আশঙ্কা থেকেই এ বার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

নোবেলজয়ীর শান্তিনিকেতনের বাড়ি ‘প্রতীচী’র সামনে প্রতিবাদ সভা করতে চলেছে সামাজিক মর্যাদা রক্ষা সমিতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর সেখানে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্বভারতী বাঁচাও কমিটি। এই পরিস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘প্রতীচী’র সামনে রাস্তার উপরেই উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন, ছাতিমতলা, কলা ভবন, সঙ্গীত ভবন, উত্তরায়ন, অ্যাগ্রো ইকোনমিক রিসার্চ সেন্টার, ইন্টিগ্রেটেড সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিবাদ, বিক্ষোভের জেরে সেখানকার পরিবেশ এবং কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানোর পাশাপাশি ইতিমধ্যেই জেলা পুলিশ সুপার, বোলপুরের মহকুমাশাসক, বোলপুর থানা এবং শান্তিনিকেতন থানাতেও চিঠি দিয়েছেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।

গত ১৯ এপ্রিল রাতে নোটিস জারি করে বিশ্বভারতী জানিয়ে দেয়, অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট যাঁরা ১৩ ডেসিম্যাল জমি (নোটিসে বলা হয়েছে, প্রতীচীর উত্তর-পশ্চিম কোণের জমি) দখলে রেখেছেন, তাঁদের ১৫ দিন বা ৬ মে-র মধ্যে তা খালি করে দিতে হবে। না হলে অমর্ত্য এবং সংশ্লিষ্ট সকল ব্যক্তিকে উল্লিখিত জায়গা থেকে ‘উচ্ছেদ’ করা হবে। নোটিসে দাবি করা হয়েছে, ‘ওই জমি জনগণের সম্পত্তি। তা দখল করে রাখা যায় না। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনকে অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। তাঁকে সশরীর হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উনি বা ওঁর কোনও প্রতিনিধি আসেননি’। পরে সেই নোটিস ‘প্রতীচী’ বাড়ির গেটে সাঁটিয়েও দেওয়া হয়। বিশ্বভারতীর এই নোটিসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা প্রতীচীতে গিয়ে পুরো ১.৩৮ একর জমির কাগজই অমর্ত্যের হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন এ বছরের জানুয়ারি মাসে। তার পরেও বিশ্বভারতী কী ভাবে তাঁকে ১৩ ডেসিম্যাল জমি খালি করার নির্দেশ দিতে পারে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তা ছাড়া, অমর্ত্যের আইনজীবীর আবেদনের ভিত্তিতে প্রতীচীর আশপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে বীরভূম জেলা প্রশাসনের হাতে। এর পরেও ‘উচ্ছেদ’-এর নোটিস ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে। জেলা প্রশাসনের সূত্রে বলা হচ্ছে, অমর্ত্যের পিতা প্রয়াত আশুতোষ সেনের নামে ১.৩৮ একর জমি লিজ দেওয়া হয়েছিল। তার রেকর্ড ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে রয়েছে। পরবর্তী কালে ১.৩৮ একর জমিই অমর্ত্যের নামে রেকর্ড করানো হয়। সুতরাং সেই রেকর্ড সংশোধন না-করে তাঁকে উচ্ছেদ-নোটিস দেওয়া যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন