থরে থরে: বাঁকুড়া মেডিক্যালে অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছে এই পাথরগুলিই। নিজস্ব চিত্র
মাঝে মধ্যেই পেটে যন্ত্রণা হতো। চিকিৎসক আঁচ করেছিলেন, পেটে এক-আধটা পাথর থাকলেও থাকতে পারে। কিন্তু এক আধটা নয়, অস্ত্রোপচার করে দেখা গেল পেটে যেন আস্ত পাথর খাদান। বুধবার বাঁকুড়া মেডিক্যালে বাঁকুড়া শহরের পাতাকোলা এলাকার যুবক অরবিন্দ বাগের পিত্তনালী থেকে বের করা হল ৪৮২টি পাথর।
বছর কুড়ির অরবিন্দ পেশায় খেত মজুর। তাঁর ভাই তারকনাথ বাগ জানান, প্রায়ই পেট ব্যথায় ভুগতেন অরবিন্দ। সম্প্রতি সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় বাঁকুড়ার একটি নার্সিংহোমে তাঁকে ভর্তি করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকেরা কলকাতায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দেন। তারকনাথের কথায়, “আমাদের কাছে কলকাতা নিয়ে যাওয়ার মতো টাকা ছিল না।’’
অরবিন্দকে ভর্তি করানো হয় বাঁকুড়া মেডিক্যালে। সেখানে তাঁর অস্ত্রোপচার করেন শল্য চিকিৎসক উৎপল দে। উৎপলবাবু বলেন, ‘‘খুবই ব্যতিক্রমী ঘটনা। পিত্তথলিতে পাথর হওয়া এখন গড়পড়তা ব্যাপার হয়ে গেলেও পিত্তনালীতে পাথর হওয়ার ঘটনা খুব কমই দেখা যায়। তার উপরে আবার এক সঙ্গে এতগুলো।’’ তিনি জানান, অরবিন্দর পিত্তনালী থেকে বের করা পাথরগুলি ৭ থেক ৮ মিলিমিটার লম্বা। অরবিন্দর পিত্তনালীটি অস্ত্রোপচার করে বাদ দিতে হয়েছে। তার জায়গায় পিত্তথলির অংশ দিয়েই তৈরি করে দেওয়া হয়েছে নতুন পিত্তনালী।
অস্ত্রোপচারের পরে পুরো ঘটনার কথা শুনে রীতিমতো আঁতকে উঠেছে অরবিন্দের পরিবার। অরবিন্দ এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তবে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচার সফল। তারকনাথবাবু বলেন, ‘‘জেলাতেই যে দাদা সুস্থ হয়ে উঠল এটাই আমাদের অনেক বড় পাওয়া।’’