খয়রাশোলে বোমায় উড়ল বাড়ির চাল

কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চিলেকোঠা বাড়ির উপর তলার চাল বোমা ফেটে উড়েছে। বাড়িটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

লোকপুর শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ২৩:৪৯
Share:

কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। প্রতীকী চিত্র।

ফের বিস্ফোরণে উড়ল ঘরের চাল। খয়রাশোল ব্লকে, শুক্রবার সন্ধ্যায়। পুলিশ সূত্রে খবর, লোকপুর থানা এলাকার নাকড়াকোন্দা গ্রাম পঞ্চায়েতের গাংপুর গ্রামে ঘটে বিস্ফোরণ।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, বোমা ফেটে উড়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দা বাবলু মণ্ডলের বাড়ির টিনের চাল। কী ভাবে ঘটনাটি ঘটল তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চিলেকোঠা বাড়ির উপর তলার চাল বোমা ফেটে উড়েছে। বাড়িটি মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বাবলু মণ্ডলের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ‘দড়ি টানাটানি’ শুরু হয়েছে। খয়রাশোল ব্লকের তৃণমূল নেতা স্বপন সেনের দাবি, ‘‘বাবলু স্থানীয় বিজেপি নেতা। এলাকায় অশান্তি পাকাতে বাড়িতে বোমা রাখা হয়েছিল। বিস্ফোরণে সেটাই প্রকাশ্যে এল।’’ আড়ালে তৃণমূলের একটা অংশের দাবি, এলাকায় কয়লা সাম্রাজ্যের দখল নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপি। এই বিস্ফোরণই তারই প্রমাণ।

Advertisement

অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। স্থানীয় বাসিন্দা তথা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বাবলু আমাদের দলের সাধারণ সদস্যও নন। খয়রাশোলে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সর্বজনবিদিত। তিনি তৃণমূলেরই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর লোক। তৃণমূল সেই দায় এখন আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে পুরোটাই সামনে আসবে।’’

এলাকাবাসীর একাংশের প্রশ্ন, পুলিশ আধিকারিকেরা সাসপেন্ড হচ্ছেন। ওসি বদল হচ্ছেন। রাজনৈতিক তরজা জারি। কিন্তু এত কিছুর পরেও বীরভূমে বিস্ফোরণ থামার নাম নেই। রাজনৈতিক দলের নেতার বাড়ি, গোয়ালঘর, ক্লাব, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিত্যক্ত আবাসন থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের নবনির্মিত ভবন— বিস্ফোরণে ধূলিসাৎ হয়েছে সবই। খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর থানা এলাকায় ফের ঘটল একই ঘটনা।
বিস্ফোরণের হার কেমন, তার একটা পরিসংখ্যান দিলেই স্পষ্ট হবে। ২৪ অগস্ট খয়রাশোলেরই কাঁকরতলা থানার বড়রা গ্রামে বোমা ফেটে উড়েছিল স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের নির্বাচিত সদস্য শেখ মহিবুলের বাড়ির একাংশ। তার পাঁচ দিনের মাথায় ২৯ অগস্ট বিস্ফোরণ ঘটে সদাইপুর থানার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের রেঙ্গুনি গ্রামে। সে দিন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়ির গোয়ালঘর উড়ে যায় বিস্ফোরণে। মারাত্মক জখম হন এক পড়শি। ১৭ সেপ্টেম্বর বিস্ফোরণ ঘটে দুবরাজপুরের খোঁয়াজ মহম্মদপুর গ্রামে। ধূলিসাৎ হয়ে যায় স্থানীয় এক তৃণমূল কর্মীর গোটা বাড়ি। আহত হয় এক শিশু। তার তিন দিনের মাথায় ফের বিস্ফোরণ হল লোকপুরে। কারও আঘাত লেগেছে কিনা সেটা স্পষ্ট নয়।

তবে বিরক্ত এলাকাবাসী বলছেন, ‘‘‘যার বাড়িতে বিস্ফোরণ তিনি কোন দলের, সেই তর্কে না গিয়েও বলা যায় বিস্ফোরণের আওয়াজ থামবে না। থামানোর কোনও চেষ্টাও প্রশাসনের তরফে নেই।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন