Ranibandh Police Station

পরিচারককে মারধর, যুবতীকে কুপ্রস্তাব! বাঁকুড়ায় অভিযুক্ত ‘মেজোবাবু’কে ক্লোজ় করে তদন্তে নামল পুলিশ, গ্রেফতার আরও ১৮

অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিককে বাঁকুড়া পুলিশ লাইনে ক্লোজ় করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাতড়ার এসডিপিও অভিষেক যাদবকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:২৩
Share:

শনিবার অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের শাস্তি চেয়ে বাঁকুড়া ঝিলিমিলি রাজ্য সড়ক অবরোধ করে স্থানীয়দের বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।

চোর সন্দেহে পরিচারককে নিজের বাড়িতে আটকে রেখে মারধরের অভিযোগ উঠেছিল পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, পরিচারকের দিদিকে কুপ্রস্তাব দিয়ে তাঁর শ্লীলতাহানিও করেছিলেন তিনি। বাঁকুড়ার রানিবাঁধের ওই ঘটনায় এ বার রানিবাঁধ থানার অভিযুক্ত ‘মেজোবাবু’ (সেকেন্ড অফিসার)-কে ক্লোজ় করে তদন্তে নামল পুলিশ। পাশাপাশি, ওই ঘটনার প্রতিবাদে শুক্র ও শনিবার রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগে ১৮ জনকে গ্রেফতার করে হাজির করানো হল আদালতে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত আধিকারিককে বাঁকুড়া পুলিশ লাইনে ক্লোজ় করে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। বাঁকুড়া জেলা পুলিশের তরফে ঘটনার তদন্ত করে আগামী তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে খাতড়ার এসডিপিও অভিষেক যাদবকে। এ দিকে এখনও পর্যন্ত নির্যাতিতের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ দায়ের না করা হলেও স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘শনিবারই ওই আধিকারিককে ক্লোজ় করা হয়েছে। খাতড়ার এসডিপিও-র নেতৃত্বে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট হাতে এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে খবর, রানিবাঁধ থানার অভিযুক্ত ‘মেজোবাবু’ রানিবাঁধ এলাকাতেই ভাড়া থাকতেন। তাঁর বাড়িতে পরিচারক হিসাবে কাজ করতেন রাজকাটা গ্রামের বাসিন্দা সজল সহিস। অভিযোগ, গত বৃহস্পতিবার মেজোবাবুর প্যান্টের পকেট থেকে কিছু টাকা খোয়া যায়। এতে সজলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। বাড়ি থেকে সব মিলিয়ে ১২ লক্ষ টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে ওই পরিচারককে বেধড়ক মারধরও করেন অভিযুক্ত। দাবি, বেল্ট ও লাঠি দিয়ে মারের পাশাপাশি সার্ভিস রিভলবার দেখিয়ে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়। এর পর ওই পুলিশ আধিকারিক পরিচারকের বাড়িতে হানা দিয়ে বাক্স ভেঙে কিছু নগদ টাকা ও একাধিক সোনার গহনা নিয়ে চলে যান। বাধা দিতে গেলে তিনি পরিচারকের দিদির শ্লীলতাহানি করেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে কুপ্রস্তাবও দেন যুবতীকে।

Advertisement

ঘটনার কথা জানাজানি হতেই শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে উত্তেজনা ছড়ায় রানিবাঁধে। অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত স্থানীয়েরা রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে ক্ষুদিরাম স্ট্যাচু মোড় অবরোধ করে রাখেন। শনিবার সকাল থেকে ফের একই জায়গায় পথ অবরোধ শুরু করেন তাঁরা। বাধ্য হয়ে শনিবার বেলা দেড়টা নাগাদ বিক্ষোভকারীদের সরাতে লাঠিচার্জ শুরু করে পুলিশ। ১৮ জনকে আটক করা হয়। রবিবার তাঁদের গ্রেফতার করে খাতড়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়েছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান-সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিকের কঠোর শাস্তির দাবিতে এখনও অনড় নির্যাতিতের পরিবার। সজলের ঠাকুমা গীতা সহিস বলেন, “নির্যাতনের কথা অন্যদের জানালে নাতিকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন ওই পুলিশ আধিকারিক। তিনি পুলিশের চাকরিতে বহাল থাকলে আমার নাতির জীবন আরও সঙ্কটে পড়বে। আমরা চাই ওই আধিকারিককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হোক।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement