দুর্বল এলাকায় পড়ে থাকার নিদান সভায়

বাঁকুড়ায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম সভা করতে এসে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীদের দুর্বল জায়গায় ভোট বাড়াতে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, দরকার পড়লে বারবার তিনি সেই সব এলাকায় নিজে আসবেন বলেও জানিয়ে গেলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খাতড়া শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

খাতড়ার সভায়। নিজস্ব চিত্র

জেলা পরিষদ দখলে এসে গিয়েছে শাসকদলের। জেলার ২২টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে ১৩টিতেই সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে গিয়েছে তারা। তিনটি মহকুমার মধ্যে একটিতে বিরোধীরা মনোনয়নই দিতে পারেনি। সেই জেলা বাঁকুড়ায় পঞ্চায়েত ভোটের প্রথম সভা করতে এসে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীদের দুর্বল জায়গায় ভোট বাড়াতে মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়ে গেলেন। শুধু তাই নয়, দরকার পড়লে বারবার তিনি সেই সব এলাকায় নিজে আসবেন বলেও জানিয়ে গেলেন।

Advertisement

খাতড়ার কেচোন্দা ভি পি এ বিদ্যাপীঠের সভায় শুক্রবার দুপুরে অভিষেক বলেন, ‘‘যে সব জায়গায় আমাদের দুর্বলতা রয়েছে, সেখানে কর্মীদের পড়ে থাকতে হবে। যেখানে ১০০ ভোটে আমরা ‘লিড’ পাওয়ার কথা, সেখানে ৪০০ ভোটের ‘লিড’ করতে হবে। দরকার হলে, আমি নিজে সেই সব জায়গায় বারবার যাব।’’

বস্তুত, বিষ্ণুপুর মহকুমার ত্রিস্তরীয় আসনের একটিতেও বিরোধীরা মনোনয়ন দিতে না পারায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল জিতে গিয়েছে। বাঁকুড়া সদর মহকুমার বহু জায়গাতেই একই ছবি। লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছে শুধু খাতড়া মহকুমা। তাও সেই লড়াইয়ে বাদ তালড্যাংরা ব্লক। মনোনয়ন দিতে গিয়ে রানিবাঁধে এক বিজেপি কর্মী খুন হন। আর প্রচারের শুরুতে পাশের রাইপুরে তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থীর বৈঠকে তির-ধনুক নিয়ে হামলার অভিযোগ ওঠে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সেই রাইপুরেই বিজেপি নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের রোড শোয়ে বিরাট ভিড় হয় বলে দাবি জেলা নেতৃত্বের। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়ার জঙ্গলমহলের কিছু এলাকায় যে বিজেপি সংগঠন বাড়িয়ে তুলেছে, তা ঘনিষ্ঠ মহলে স্বীকার করছেন জেলা তৃণমূলের কিছু নেতাও। খাতড়ায় দাঁড়িয়ে তাই অভিষেকের ওই মন্তব্য জঙ্গলমহলের দলীয় কর্মীদের ভোটের লড়াইয়ের জন্য চাঙ্গা করবে বলে মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতাদের অনেকেই।

Advertisement

অভিষেক অবশ্য বিজেপিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি দাবি করেন, ‘‘লড়াইটা এখনও লাল ও সবুজেরই। মাঝে গেরুয়া বলে কিছু নেই। যাঁরা একসময়ে সিপিএমের হয়ে দুষ্কর্ম করত, তারাই এখন বিজেপির হয়ে নেমেছে। সিপিএম ও বিজেপি মুদ্রার এ পিঠ ও পিঠ।’’ তিনি প্রার্থীদের দেখিয়ে বলেন, ‘‘এঁরা কেউ প্রার্থী নন, প্রার্থী এক জনই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এলাকায় উন্নয়ন জারি রাখতে চাইলে তাই তৃণমূলকে ভোট দিন।’’

পুলিশের দাবি, এ দিন অভিষেকের সভায় ভিড় ছিল প্রায় ১৮ হাজার। যদিও জেলা তৃণমূল নেতা অরূপ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘ভিড় মোটেই ২০ হাজারের কম নয়। এই ভিড়ই বুঝিয়ে দিল, বিরোধীরা এখানে কোনও সংগঠনই গড়তে পারেনি।’’ যদিও বিজেপির রাজ্য নেতা সুভাষ সরকারের পাল্টা দাবি, ‘‘জেলার অল্প যে ক’টি আসনে ভোট হচ্ছে, তা নিয়েও তৃণমূল যে আতঙ্কে রয়েছে, তা অভিষেকের কথাতেই এ দিন স্পষ্ট। গোটা জেলা থেকে খাতড়ায় লোক নিয়ে গিয়েও মাঠ ভরাতে পারেনি ওরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন