অন্য নামে ঋণ তুলে লোপাট

পুলিশ জানায়, পাইকর থানার মিত্রপুর গ্রামের ননগড়ের বাসিন্দা রাধারানি সাহা ও তাঁর বোনপো বাপ্পা সরকার। অভিযোগ, মুরারই থানার কোপা গ্রামের নীলিমা সরকারের সাহায্যে তাঁরা বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের নিয়ে ৭-১০ জন করে বিভিন্ন দল গড়েন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫৪
Share:

ক্ষোভ: থানায় নালিশ। নিজস্ব চিত্র

কয়েক লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ উঠল একটি পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গ্রামের দুঃস্থ মহিলাদের নামে ঋণ তুলে তাঁরা তা লোপাট করেছেন বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে শতাধিক মহিলা পাইকর থানায় গিয়ে তা নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

পুলিশ জানায়, পাইকর থানার মিত্রপুর গ্রামের ননগড়ের বাসিন্দা রাধারানি সাহা ও তাঁর বোনপো বাপ্পা সরকার। অভিযোগ, মুরারই থানার কোপা গ্রামের নীলিমা সরকারের সাহায্যে তাঁরা বিভিন্ন গ্রামের মহিলাদের নিয়ে ৭-১০ জন করে বিভিন্ন দল গড়েন। তার পরে পাঁচটি বেসরকারি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হয়। অভিযোগ, ওই মহিলাদের বলা হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা ও মশলা ভাঙার মেশিন দেওয়া হবে। ওই টাকা শোধ করতে হবে না। বাপ্পা সরকার ও রাধারানি তা শোধ করবেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক বছরের বেশি সময় ধরে ওই কারবার চলছিল। বেসরকারি অর্থপ্রদানকারী সংস্থার টাকাও সপ্তাহে সপ্তাহে মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছিল। লোকমুখে ওই কারবারের কথা পাইকর, মুরারই, নলহাটি, মুর্শিদাবাদে ছড়িয়ে পড়েছিল। অভিযোগ, দু’সপ্তাহ ধরে ঋণের টাকার কিস্তি জমা পড়েনি। বেসরকারি সংস্থার তরফে গ্রহীতাদের চাপ দেওয়া শুরু হয়। অভিযোগ, বাপ্পার বাড়িতে গিয়ে সকলে দেখেন দরজা তালাবন্ধ। ফোনে রাধারানির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

সেই খবর ছড়াতেই এ দিন কোপা, দারিয়াপুর, গোবিন্দপুর, জোগাই, স্বর্গডাঙা, হরিরামপুর থেকে একশোরও বেশি মহিলা পাইকর থানায় আসেন। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন নীলিমা রবিদাস। তিনি বলেন, ‘‘রাধারানি হাসপাতালের কর্মী ছিলেন। বছর দু’য়েক আগে অবসর নেন। কারবারের কথা বলে আমাকে দিয়ে টাকা তোলান। আমি কোনও টাকা নিইনি। তা-ও ফেঁসে গেলাম।’’

Advertisement

কোপা গ্রামের প্রতারিত টুকটুকি রবিদাস বলেন, ‘‘আমার নামে ওঁরা এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা ঋণ তুলেছিলেন। আমাকে পাঁচ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এখন ব্যাঙ্কের লোক এসে টাকা শোধের জন্য চাপ দিচ্ছে। এত টাকা কী ভাবে শোধ করব ভেবে পারছি না।” একই অবস্থা গোবিন্দপুর গ্রামের সুনিতা রবিদাস, সাগরদিঘি থানার বেদানা রবিদাসের মনো অনেকের। হিয়াতনগরের বেসরকারি ঋণদাতা সংস্থার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন গোষ্ঠীকে ঋণ দিয়ে থাকি। প্রাপকদের অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকা তুলে কেউ যদি অন্য কাউকে দিয়ে থাকেন তার দায় আমরা নিতে পারি না।’’

মুরারই ২ ব্লক সভাপতি আফতাবুদ্দিন মল্লিক বলেন, ‘‘ দোষীরা শাস্তি পাবেই।’’ বিজেপির মুরারই ২ ব্লকের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের গ্রেফতার না করা হলে আন্দোলনে নামা হবে।’’ পাইকর থানার পুলিশ জানায়, নীলিমা রবিদাসকে আটক করা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন