প্রতীকী ছবি
করোনা-সংক্রমণ নিয়ে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় ভুয়ো খবর ছড়ানোর অভিযোগে মঙ্গলবার তিন জনকে গ্রেফতার করল পুরুলিয়া পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে,, ধৃত স্বরূপ মাহাতো, বিজয় কুইরি ও সরোজ মাহাতো জেলার আড়শার বাসিন্দা। অন্য দিকে, করোনা-গুজবে উত্তেজনা ছড়ায় মানবাজারেও।
পুলিশ সূত্রে খবর, ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরা ‘করোনাভাইরাসে আক্রান্ত’ এক ব্যক্তিকে কলকাতার বেলেঘাটা আইডিতে পাঠানো হয়েছে বলে বিভিন্ন ‘হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ’-এ ভুয়ো খবর ছড়িয়েছিল। পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। তদন্ত করে চিহ্নিত করা হয় ওই তিন ব্যক্তিকে। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বুধবার ওই তিন জনকে জামিন দেয় আদালত। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে সরকারি আদেশ অমান্য করা, উস্কানি দিয়ে সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের চেষ্টা এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ হয়েছে।
জেলার পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান জানান, করোনা সংক্রান্ত ভুয়ো খবর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে অভিযোগ দায়ের করে। এই পরিস্থিতিতে ভুয়ো খবর ছড়ানো হলে তাকে উস্কানি দেওয়ার অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। এতে এলাকায় শান্তিভঙ্গের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তাকে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। ঝুঁকি নিয়ে মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করছেন, এ ধরনের ভুয়ো খবর তাঁদের মনোবলে আঘাত করবে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, যে ব্যক্তি সম্পর্কে ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়েছিল, তাঁর চিকিৎসা চলছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। তিনি জ্বরে আক্রান্ত। তবে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত নন।
করোনা নিয়ে গুজবের জেরে এ দিন চাঞ্চল্য ছড়ায় মানবাজারেও। গুজবের উৎস সন্ধানে তদন্ত হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে খবর, মানবাজারের কিসান মাণ্ডিতে ‘করোনা-আক্রান্ত’ কয়েকজন যুবককে ‘কোয়রান্টিন’-এ রাখা হয়েছে বলে ‘সোশ্যাল মিডিয়া’য় একটি ‘পোস্ট’ নজরে আসে এলাকার কয়েকজনের। সে রটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। কিসান মান্ডি চত্বরে একটি আনাজ বাজার বসে।
ভুয়ো খবরের জেরে আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরা বাজার ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। বাসস্ট্যান্ডের কাছে মূল রাস্তার পাশে বসে আনাজ বিক্রি শুরু করেন তাঁরা। খবর পেয়ে হস্তক্ষেপ করেন বিডিও (মানবাজার-১) নীলাদ্রি সরকার। পরে কয়েকজন ব্যবসায়ী মান্ডিতে ফিরে যান।
বিডিও বলেন, ‘‘কিসান মান্ডি লাগোয়া কর্মতীর্থ ভবনে ‘কোয়রান্টিন’-এ রাখা হয়েছে বাইরের কয়েকজন যুবককে। তাঁরা তালাবন্ধ ভবনের মধ্যে রয়েছেন। সেখানেই তাঁদের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ভবনের সঙ্গে কিসান মান্ডির সম্পর্ক নেই। ভীতি ছড়ানোর মতলবে কে বা কারা এই কাণ্ড করেছে। পুলিশকে দেখতে বলেছি।’’