Coronavirus

৩০ কিমি হেঁটে বাড়ির পথে শ্রমিকেরা

গোটা দেশে লক-ডাউন হওয়ার পরে কোনও গাড়ি না পাওয়ায় এ ভাবেই বেশ কিছু শ্রমিক ফিরছিলেন ঘরে।

Advertisement

তন্ময় দত্ত                   

মুরারই শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০২০ ০৮:২৮
Share:

অসহায়: রেললাইন ধরে ফিরছেন শ্রমিকেরা। নিজস্ব চিত্র

ওঁরা বাড়ি ফিরছিলেন হেঁটে। কেউ রামপুরহাট থেকে মুরারই ৩২ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেবেন। কেউ পড়শি জেলার রঘুনাথগঞ্জ থেকে ২২ কিলোমিটার উজিয়ে আসবেন মুরারইয়ে!

Advertisement

গোটা দেশে লক-ডাউন হওয়ার পরে কোনও গাড়ি না পাওয়ায় এ ভাবেই বেশ কিছু শ্রমিক ফিরছিলেন ঘরে। বুধবার দুপুরে এমনই ছবি ধরা পড়ল মুরারইয়ে। রেললাইন ধরে তাঁদের হাঁটতে দেখা গেল। কিছু লোককে দেখা গেল রঘুনাথগঞ্জ-মুরারই রাস্তায় ভাদীশ্বড় মোড়ের কাছে। তাঁরা জানালেন, কেউ রঘুনাথগঞ্জ থেকে হেঁটে আসছেন, কেউ নলহাটি ও চাতরা থেকে। এক এক জনের গন্তব্য এক এক জায়গায়। কেউ রাজগ্রামে, কেউ ঝাড়খণ্ডের মহেশপুর কিংবা পাকুড়ে।

কথা বলে জানা গেল, এঁরা সকলে পরিবার নিয়ে কাজ করছিলেন ইটভাটায়, পাথর শিল্পাঞ্চলে। কোনও দলে ছিল সাত, কোথাও দশ কিংবা তিন। তাঁরা ভেবেছিলেন দু’তিন দিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। সেই আশায় কাজের জায়গায় থেকে গিয়েছিলেন। কিন্তু, এক দিন পরে বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে কোনও গাড়ি পাননি। বাধ্য হয়ে হাঁটা পথে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। রঘু টুডু, অম্লান ভকত বলেন, ‘‘কাজের জায়গায় সঞ্চয়ে থাকা সমস্ত খাবার শেষ হয়ে যাচ্ছিল। পাথর শিল্পাঞ্চল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভোর থেকে হাঁটতে শুরু করেছি। সন্ধ্যের মধ্যে বাড়ি পৌঁছে যাব।’’

Advertisement

আসলাম শেখেরা বলছেন, ‘‘বাধ্য হয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতেও গাড়ি খুঁজেছি। বেশি টাকা দেওয়ার কথা বললেও কোনও গাড়ি চালক নিয়ে আসতে চাননি। ট্রেন, বাস, ট্রাক সব বন্ধ। এ দিন সকাল থেকে জল ছাড়া আর কোনও খাবার পাওয়া যায়নি। পরিস্থিতি দেখে আর অপেক্ষা না করে হেঁটে বাড়ি ফিরছি।’’

বিডিও (মুরারই) নিশীথভাস্কর পাল বলেন, ‘‘যাঁরা বাড়ি ফিরতে চাইছেন, তাঁদের স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত ছিল। ২৪ তারিখ রাজগ্রামে পাথর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের গাড়ি করে ঝাড়খণ্ডে তাঁদের বাড়ি রেখে আসা হয়েছিল। আগামী দিনেও এমন কোনও মানুষ অথবা পরিবার আটকে থাকলে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাঁদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন