আক্রান্ত চার জন, জ্বরের সমীক্ষা শুরু করল পুরুলিয়া পুরসভা

আবার ডেঙ্গি শহরে, উদ্বেগ

ফের ডেঙ্গির খবর এল পুরুলিয়া শহর থেকে। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) গুরুদাস পাত্র জানান, গত সপ্তাহে শহরের চার জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। তবে খবর মেলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন বলে দাবি গুরুদাসবাবুর। সোমবারই শহরের সমস্ত ওয়ার্ডে জ্বরের সমীক্ষা শুরু করেছে পুরসভাও। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৪৬
Share:

সতর্ক: পুরুলিয়ার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের দেবীমেলা এলাকায় ড্রেনের জলের নমুনা সংগ্রহ। ছবি: সুজিত মাহাতো

ফের ডেঙ্গির খবর এল পুরুলিয়া শহর থেকে। জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ (২) গুরুদাস পাত্র জানান, গত সপ্তাহে শহরের চার জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু ধরা পড়েছে। তবে খবর মেলার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন বলে দাবি গুরুদাসবাবুর। সোমবারই শহরের সমস্ত ওয়ার্ডে জ্বরের সমীক্ষা শুরু করেছে পুরসভাও।

Advertisement

এই বছর ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আসার পরে ফের এই খবরে চিন্তায় পড়েছে স্বাস্থ্য দফতর। গত অগস্টের গোড়ায় শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রথম ডেঙ্গি আক্রান্তের কথা জানা গিয়েছিল। কয়েক দিনের মধ্যেই লাগোয়া ২১ নম্বর ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি ছড়ায়।

শহরের দেশবন্ধু রোডের ওই এলাকায় শপিং মল, মাল্টিপ্লেক্স, হোটেল প্রভৃতি রয়েছে। গড়ে উঠেছে একাধিক আবাসনও। ওই এলাকা আর লাগোয়া কিছু ওয়ার্ড থেকে প্রায় একশো জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল তখনই। স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার যৌথ অভিযানে ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আসে সেপ্টেম্বরে। ডেঙ্গিতে কোনও মৃত্যু হয়নি।

Advertisement

কালীপুজোর পরে কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে বিক্ষিপ্ত ভাবে জ্বরের কথা শোনা যাচ্ছিল। গত সপ্তাহে চার জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মেলে। তার মধ্যে দু’জন ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের। জায়গাটা ২১ নম্বর ওয়ার্ড লাগোয়া। খবর পাওয়ার পরেই সোমবার এলাকায় যান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পদস্থ কর্তারা। দলে ছিলেন উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গুরুদাসবাবু, মহামারি বিশেষজ্ঞ সতীনাথ ভুঁইয়া, পতঙ্গ বিশারদ সংকর্ষণ রায়।

এ দিন জাতীয় সড়ক লাগোয়া ২১ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে তাঁরা দেখেন, নিকাশি নালার জমা জলে গিজগিজ করছে মশার লার্ভা। নালা তো বটেই, এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জমে রয়েছে জল। তাতেও একই অবস্থা। কয়েকটি জায়গা থেকে লার্ভা-সহ জলের নমুনা সংগ্রহ করেন দফতরের কর্তারা। এক বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘‘লার্ভাগুলি কোন প্রজাতির মশার, সেটা দেখার জন্যই নমুনা নেওয়া হয়েছে। তবে প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে এডিস নয়, কিউলেক্স।’’ তিনি জানান, কিউলেক্স ফাইলেরিয়া ও জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের জীবাণুর বাহক।

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, সাধারণত শীত পড়লে ডেঙ্গির প্রকোপ কমে যায়। কারণ, জল শুকিয়ে মশার লার্ভা মরে যায়। তিনি জানান, একটু জমা জলও কোথাও থাকলে তার মধ্যে লার্ভাগুলি বাঁচার লড়াই চালিয়ে যায়।

পুরসভার কর্মীরা জ্বরের সমীক্ষা শুরু করেছেন। কোথাও জমা জল দেখলে রিপোর্টে সেই কথা উল্লেখ করতে বলা হয়েছে তাঁদের। দেখতে বলা হয়েছে, কারও বাড়িতে জল জমে রয়েছে কি না।

এ দিন ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি নালায় প্লাস্টিক পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এর ফলে জল আটকে যায়। স্রোত না থাকায় বাড়তে থাকে মশা। এলাকার বাসিন্দা তিলকা সর্দার, রবি রাজোয়াড়রা বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ি নিকাশি নালা লাগোয়া। এই অবস্থার মধ্যেই আমাদের থাকতে হচ্ছে। দিনের বেলায় ঘরের ভিতরে মশা উড়ে বে়ড়াচ্ছে।’’ পুরুলিয়ার পুরপ্রধান সামিমদাদ খানের দাবি, পুরসভার আওতায় থাকা নালাগুলি তাঁরা নিয়মিত সাফাই করেন। তবে বাসিন্দাদের আরও সচেতন হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন