Dubrajpur

রেশনের ডাল পাচ্ছি না কোন দোষে, প্রশ্ন গীতা শক্তিদের

বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানাব।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২০ ০০:৪২
Share:

প্রতীকী ছবি।

তাঁরা সমাজে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। ‘ডিজিটাল’ রেশন কার্ডও রয়েছে। তবু কেন তাঁরা রেশনে ডাল পাচ্ছেন না, জানতে বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছেন দুবরাজপুর পুর-এলাকায় বসবাসকারী শতাধিক আদিবাসী পরিবার।

Advertisement

দুবরাজপুর পুর-এলাকায় বেশ কিছু আদিবাসী পরিবারের বাস। ১ নম্বর ওয়ার্ডের কোঁড়াপাড়ার বাসিন্দা সাগু ওরাং, গীতা ওরাং, শক্তি ওরাং বা বৈরাগীকোন্দার বাসিন্দা রবিলাল টুডু, ঝাপান টুডু, কলেজ পড়ুয়া সোনালি মাড্ডিদের ক্ষোভ, ‘‘চলতি মাসে বহু রেশন কার্ডগ্রাহকই ডাল পেয়েছেন। তাঁদের অনেকেই আমাদের থেকে অবস্থাপন্ন। অথচ আমরা গরিব হলেও রেশন ডিলার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘ডাল তোমাদের জন্য নয়’। কী দোষ আমাদের। সুরাহার দাবিতেই বিডিও-কে লিখিত আবেদন জানিয়েছি।’’

যদিও তাঁরা ডাল পাবেন, এমন আশ্বাস বিডিও দিতে পারেননি। কারণ, ওঁদের হাতে কেন্দ্র নয়, রয়েছে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের আরএসকেওয়াই- ১ কার্ড। অথচ জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত পরিবার পিছু এক কিলোগ্রাম করে ডাল বিনামূল্যে পাবেন শুধুমাত্র জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার আওতাভুক্ত রেশনকার্ড গ্রাহকেরাই। সব প্রকার রেশন কার্ড গ্রাহকদের জন্য বরাদ্দ নয় ডাল। বিডিও (দুবরাজপুর) অনিরুদ্ধ রায় বলেন, ‘‘সমাজে পিছিয়ে পড়া অংশ হিসেবে ওঁদের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার আওতাভুক্ত রেশনকার্ড থাকাই উচিত ছিল। আমি বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানাব।’’

Advertisement

লকডাউনের জন্য দিন আনি দিন খাই মানুষের রোজগার বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে গরিবদের খাবারের জোগান দিতে রেশনের মাধ্যমে চাল ও আটার মতো খাদ্যসামগ্রী বিনামূল্যে দিচ্ছে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার। প্রাপ্য চাল-আটার পাশাপাশি জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা যোজনার (এনএফএসএ) তিন প্রকার রেশনকার্ড গ্রাহককে পরিবার পিছু এক কিলোগ্রাম করে ডাল বিনামূল্যে তিন মাস ধরে দেওয়া শুরু হয়েছে চলতি মাসের ১৮ তারিখ থেকে। জেলার ৯৬৩ জন রেশন ডিলারের মাধ্যমে ডাল বিলি শুরু হয়েছে।

এনএফএসএ চালুর পরে আর্থিক অবস্থা অনুসারে তিন ধরনের কার্ড মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় ২৭ লক্ষ কার্ড। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে জাতিগত আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার উপরে ভিত্তি করে ওই কার্ডগুলি দেওয়া হয়েছে, সেই সমীক্ষায় জেলার বহু প্রকৃত গরিব মানুষের নাম বাদ গিয়েছিল। সেই খামতি মেটাতে রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা যোজনা বা দু’ধরনের কার্ড দেওয়া হয়। গরিবদের জন্য আরকেএসওয়াই-১ এবং তুলনায় স্বচ্ছলদের জন্য আরকেএসওয়াই-২। এই মুহূর্তে জেলায় রাজ্য খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পে দেওয়া কার্ডের সংখ্যা ১৫ লক্ষেরও বেশি।

কিন্তু, এঁরা কেউই এনএফএসএ-র আওতাভুক্ত না হওয়ায় রেশন থেকে বিনামূল্যে ডাল পাচ্ছেন না। এত সংখ্যক মানুষ ডাল না পেলে সমস্যা হতে পারে, সেটা আগাম আঁচ করেছিল খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। এই বিষয়ে রেশন কার্ড গ্রাহকদের মধ্যে যাতে বিভ্রান্তি বা ভুলবোঝাবুঝি না থাকে, জেলার প্রতিটি রেশন দোকানের সামনে পোস্টার সাঁটিয়ে সেটা প্রচার করেছে খাদ্য দফতর। কিন্তু প্রচাক যে সব অংশের মানুষের কাছে পৌঁছয়নি, তা দুবরাজপুরের ঘটনা থেকেই স্পষ্ট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন