Durga Puja 2022

কেষ্ট-তালুকে বহু পুজোই জৌলুসহীন

সূত্রের দাবি, দুবরাজপুর ও খয়রাশোল এলাকার বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজোয় মোটা অনুদান আসত খয়রাশোলের এক অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কয়লা ও বালি কারবারির কাছ থেকে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

সিউড়ি শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৩৪
Share:

পুজো-প্রচারে অনুব্রতর ছবি। দুবরাজপুরে। নিজস্ব চিত্র

অতিমারির চোটে পরপর দু’বছর পুজো ছিল জৌলুসহীন। এ বারেও কিন্তু বীরভূমের অনেক বড় দুর্গাপুজোয় বাহুল্য কম। এর পিছনে কি ‘গরু পাচার মামলা’র পরোক্ষ প্রভাব, প্রশ্ন উঠেছে জেলা জুড়ে।

Advertisement

আড়ালে অনেক পুজো উদ্যোক্তাই বলছেন, এই মামলায় সিবিআইয়ের হাতে জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ধরা পড়া ইস্তক পরিস্থিতির আমূল বদল ঘটেছে। অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অনুদানে পুষ্ট ছিল একাধিক দুর্গাপুজো। এ বারে তাদের অনেকেই জাঁকজমক কমিয়েছে।

জেলার নথিভুক্ত ২৫৬০টি বারোয়ারি দুর্গাপুজো এ বার ৬০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান পেয়েছে। কিন্তু, শুধু সে অনুদানে কি আর বড় কমিটিগুলির চলে? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার পুজো কমিটির কিছু সদস্য মেনে নিয়েছেন, সদস্য চাঁদা, এলাকা ভিত্তিক চাঁদা, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের স্পনসরশিপ— এ সবের পাশাপাশি একটা বড় অঙ্কের টাকা আসত বালি, পাথর, কয়লা গরু কারবারের সঙ্গে যুক্তদের কাছ থেকে। অনুব্রত গ্রেফতারের পর থেকে তাঁর ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী ও বড় নেতারা আড়ালে থাকতেই পছন্দ করছেন।

Advertisement

সূত্রের দাবি, দুবরাজপুর ও খয়রাশোল এলাকার বেশ কয়েকটি বারোয়ারি পুজোয় মোটা অনুদান আসত খয়রাশোলের এক অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ কয়লা ও বালি কারবারির কাছ থেকে। বেশ কিছু দিন হল তাঁর খোঁজ নেই। ফলে, তাঁর থেকে ‘অনুদান’ মিলবে কি না, প্রশ্ন। বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, জেলায় বেশ কয়েকটি পুজোয় মোটা চাঁদা দিতেন গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম থাকা আব্দুল লতিফ ওরফে হিঙ্গুল। তিনিও গা ঢাকা দিয়েছেন। অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সিউড়ির কোটিপতি পাথর ব্যবসায়ীও এ বারে বাড়িতে সিবিআই হানার পর থেকে আড়ালে।

জেলার পুজো উদ্যোক্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এ বারে চাষ ভাল হয়নি, একশো দিনের কাজ বন্ধ হওয়ায় গ্রামের মানুষের হাতে টাকা নেই। পাথর শিল্পাঞ্চল অনেক দিন পরে খুললেও সে-ভাবে উপার্জন নেই। ফলে, চাঁদার তহবিলেও টান পড়ছে। সমস্যা আরও বাড়িয়েছে অনুব্রতের গ্রেফতার-পরবর্তী পরিস্থিতি। জেলার এক পুজো কমিটির কর্তা বলছেন, ‘‘আগে শাসকদলের ছোট-বড়-মাঝারি নেতার কাছে গিয়ে আবদার করলেই একটা গেট বা পোস্টার মিলত। এ বার বেশির ভাগই সামনে আসতে চাইছেন না।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র মলয় মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘সরকার মোটা টাকা অনুদান দিয়েছে। প্রত্যেক ক্লাবই চাঁদা পায়। কয়লা-বালির টাকায় ভরসা করে দুর্গাপুজো হয়— এটা হাস্যকর যুক্তি ছাড়া আর কিছু নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন