Bolpur

অনুব্রত জেলে, শিল্প চায় শিবপুর

এক সময় এই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রচ্ছন্ন হুমকি শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। সরাসরি পুলিশ কর্মীদেরও শাসাতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:০০
Share:

পড়েছে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র

অনুব্রত মণ্ডল জেলে যেতেই ফের শিল্পের দাবিতে সরব হল বোলপুরের শিবপুর মৌজার ‘জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ’। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, শিল্পের দাবির পাশাপাশি পোস্টার সাঁটিয়ে মঞ্চের সদস্যেরা লিখেছেন—‘চাষজমির উপরে চোর-ডাকাতদের প্রোমোটারি উন্নয়ন মানছি না, মানব না’! পোস্টারে কারও নাম নেই, কিন্তু গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত জেলা তৃণমূল সভাপতিই মঞ্চের আক্রমণের নিশানায় বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।

Advertisement

প্রসঙ্গ, ২০০০-২০০১ সালে শিল্প করার জন্য তৎকালীন বাম সরকার শিবপুর মৌজায় প্রায় ৩০০ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করেছিল। অনেক চাষি জমি দিলেও সঠিক দাম পাননি, অনেকে ক্ষতিপূরণের টাকাও পাননি বলে অভিযোগ। ২০১৫ সালের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, শিবপুরে গীতবিতান আবাসন, বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়, ক্ষুদ্র বাজার এবং আইটি হাব করবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরে পরেই কাজ শুরু হয় প্রকল্পগুলির। বর্তমানে বেশকিছু প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। কিন্তু, শিবপুর মৌজার জমিদাতা কৃষকেরা প্রতম থেকে দাবি করে এসেছেন, শিল্পের জন্য অধিগৃহীত জমিতে আবাসন নয়, করতে হবে কর্মসংস্থানমুখী শিল্পই। এই নিয়ে তাঁরা বহু আন্দোলন-বিক্ষোভ করেছেন। একবার সিউড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতার প্রশাসনিক বৈঠক চলাকালীন তাঁরা কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন।

এক সময় এই আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে প্রচ্ছন্ন হুমকি শোনা গিয়েছিল তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গলায়। সরাসরি পুলিশ কর্মীদেরও শাসাতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই মন্তব্য ঘিরে জোর বিতর্ক হয়। সেই সময় জমিহারা কৃষকেরা কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কয়েক জন আন্দোলনকারীকে ‘মিথ্যা মামলা’য় জড়ানো হয় বলেও অভিযোগ। এর পরে আন্দোলন সাময়িক ভাবে থিতিয়ে পড়েছিল।

Advertisement

এ বার অনুব্রত গ্রেফতার হতেই ফের শিল্পের দাবিতে নতুন করে সরব হলেন শিবপুরের জমিদাতারা। শুক্রবার বিভিন্ন দাবিদাওয়া সংবলিত পোস্টার এলাকা জুড়ে লাগান ‘জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চ’-এর সদস্যেরা। তাতেই ‘চোর-ডাকাত’ শব্দের উল্লেখ ছিল। পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এ দিন গীতবিতান আবাসনের সামনে বিক্ষোভও দেখান জমিদাতা কৃষকেরা। বিক্ষোভে শামিল শেখ আমির, শেখ সেলিমরা বলেন, “শিল্পের জন্য নেওয়া জমিতে আমরা শিল্পই চাই। তাই ফের আন্দোলনের পথ বেছে নিয়েছি।” কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের প্রতিনিধি মির্জা জসীমউদ্দিন বলেন, “এই জমি সরকারকে দেওয়া হয়েছিল শিল্প গড়ে তোলার জন্য। কিন্তু আজ অবধি এখানে শিল্প হয়নি। তার পরিবর্তে বানানো হয়েছে আবাসন। এর প্রতিবাদে আগামী দিনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন