‘কেউ কোনও দিন খোঁজ নেয়নি’, শুনলেন মন্ত্রী

সোমবার ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি উপলক্ষে কোতুলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা গিয়েছিলেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শিরোমণিপুর, ব্রহ্মডাঙা ও জলিঠ্যা গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০১:১০
Share:

পাশে: কোতুলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা। (ডান দিকে) পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি। নিজস্ব চিত্র

মন্ত্রীকে দেখেই এক গ্রামবাসী বলে উঠলেন, ‘‘কেউ কোনও দিন আমাদের খোঁজখবর নেয়নি।’’ তাঁর কথার রেশ ধরেই আর এক জন বললেন, ‘‘পঞ্চায়েত সদস্য থেকে শুরু করে প্রধান, অভাব-অভিযোগ জানিয়েছি অনেকের কাছেই। মন দিয়ে শোনেনি কেউ।’’ শুনে মন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘সেই জন্যই তো আমি এসেছি।’’

Advertisement

সোমবার ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি উপলক্ষে কোতুলপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা গিয়েছিলেন তাঁর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত শিরোমণিপুর, ব্রহ্মডাঙা ও জলিঠ্যা গ্রামে। মন্ত্রীকে কাছে পেয়েই অভিযোগের ঝাঁপি খুলে দেন ব্রহ্মডাঙা গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা।

রবিবার শ্যামলবাবু রাত কাটিয়েছিলেন ওই এলাকারই এক বাসিন্দার বাড়িতে। সকাল হতেই শুরু করেন জনসংযোগ। অন্যদিকে, এ দিনই পুরুলিয়ার রঘুনাথপুরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি শুরু করেছেন স্থানীয় বিধায়ক পূর্ণচন্দ্র বাউড়ি।

Advertisement

শ্যামলবাবুকে কাছে পেয়ে অনেক গ্রামবাসী তাঁদের মনের কথা জানান। কেউ রেশন কার্ড না পাওয়ার অভিযোগ তোলেন। কেউ আবার বার্ধক্য ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন। পাশাপাশি মন্ত্রী গ্রামে আসায় উচ্ছ্বাসপ্রকাশও করেন অনেকে। কেউ চেয়ার এগিয়ে দেন মন্ত্রীর বসার জন্য। কেউ আবার কাঠের চৌকি পেতে রেখেছিলেন শ্যামলবাবুর জন্য।

শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘গ্রামের সকলেই কম-বেশি সরকারি সাহায্য পেয়েছেন। মানুষকে বাঁচানোর জন্য নদীর পাড় বাঁধানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে চেক ড্যাম।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ব্রহ্মডাঙা গ্রামে শতাধিক পরিবার বাস করেন। সকলেই গরিব। ৩৪ বছরে সিপিএম একটা করে বাড়ি দিলে এই গ্রামে ৩৪ টা বাড়ি হত। এই গ্রামে না এলে ওঁদের অবস্থা জানতে পারতাম না।’’

রবিবার রাত থেকে এ দিন পর্যন্ত ৯৫টি বাড়ি ঘুরেছেন শ্যামলবাবু। গ্রামবাসীর অভিযোগ, বক্তব্য, দাবি লিখে নিয়েছেন নোটবুকে।

এ দিকে, মন্ত্রীর জন সংযোগ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির বিষ্ণুপুর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি স্বপন ঘোষের তীর্যক মন্তব্য, “বিজেপিকে নকল করে কী লাভ। দিদির হুকুমে এখন তৃণমূল নেতারা গ্রামে গ্রামে ছুটছেন। এক সঙ্গে বসে খাওয়া দাওয়া করছেন। কিন্তু এতে কোনও লাভ হবে না তৃণমূলের। কারণ, মানুষের মনে বিজেপি গেঁথে গিয়েছে। তৃণমূলের ডুবন্ত জাহাজ আর তুলতে পারবে না দলের কর্মীরা।”

‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি উপলক্ষে এ দিন রঘুনাথপুরের নিতুড়িয়ার সড়বড়ি গ্রামের বাবাসাহেব অম্বেডকর পার্কে দলের নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন পূর্ণচন্দ্রবাবু। প্রত্যেক গ্রামেই কর্মীদের জন সংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন তিনি। সমস্যার কথা জানানোর জন্য নম্বর লেখা কার্ড এ দিন সড়বড়ি গ্রামের কয়েকটি পাড়ায় বিলি করেন বিধায়ক। বিধায়ক পূর্ণচন্দ্রবাবু জানান, নিকাশি এবং রাস্তার সমস্যা কথা তাঁকে জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তিনি চেষ্টা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন