আঘাতে বেহুঁশ সাহিলকে জলে, শঙ্কা

এটা কি খুন না দুর্ঘটনার পরে দেহ লোপাটের চেষ্টা? তদন্ত নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি পুলিশ। মুরারই থানার এক আধিকারিক শুধু বলেছেন, ‘‘এই মৃত্যুর পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মুরারই শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৯
Share:

রহস্য: মৃত সাহিল শেখ।

মাথায় ভারী কোনও জিনিসের আঘাতে বেহুঁশ হয়ে গিয়েছিল ন’বছরের সাহিল শেখ— ময়নাতদন্তের পরে প্রাথমিক ভাবে এমনই মনে করছেন তদন্তকারীরা। রিপোর্ট হাতে না পেলেও প্রাথমিক ভাবে পুলিশের আশঙ্কা, এর পরে ওই ছেলেটিকে কোনও জলাশয়ের পাশে ফেলে আসা হয়েছিল। তা-ই তার ফুসফুস, পেটে কাদাজল মিলেছে। ডান কানের কিছুটা সম্ভবত খুবলে খেয়েছে কাঁকড়া। ডান হাতের মুঠোয় মিলেছে কাদামাটি। এক পাশ করে পড়ে থাকায় জলের ছোঁয়ায় কুঁকড়ে গিয়েছিল সাহিলের ডান হাত ও দেহের কিছুটা অংশের চামড়া।

Advertisement

এটা কি খুন না দুর্ঘটনার পরে দেহ লোপাটের চেষ্টা? তদন্ত নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি পুলিশ। মুরারই থানার এক আধিকারিক শুধু বলেছেন, ‘‘এই মৃত্যুর পিছনে কোনও রহস্য রয়েছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাবে না। তদন্ত ঠিকপথে এগোচ্ছে। দ্রুত দোষীদের ধরে ফেলা হবে।’’

ভাদিশ্বর গ্রামে নির্মীয়মাণ রাস্তায় ঠিকাদার সংস্থার কোনও গাড়ির ধাক্কায় সাহিলের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসীদের। ওই রাস্তার কাজে ট্রাক্টর চলছিল পাশের সাফুয়া গ্রামের এক ব্যক্তির। মঙ্গলবার গভীর রাতে তাঁকে আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চলেছে জিজ্ঞাসাবাদ। সোমবার আটক করা হয়েছিল ঠিকাদার সংস্থার আরও তিন কর্মীকেও। তবে তাঁদের কাছ থেকে তেমন কোনও সূত্র মেলেনি বলেই দাবি তদন্তকারীদের। কেন তবে তাঁদের আটক করে রাখা হয়েছে? সেই জবাব অবশ্য মেলেনি। পুলিশ সূত্রে খবর, ভারী জিনিস বলতে কোনও গাড়ি হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

Advertisement

এমন পরিস্থিতির মধ্যেই এ দিন সকালে আচমকা নিখোঁজ হয়ে যান সাহিলের কাকা হাইদুল শেখ। দুপুরে মুরারই থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। বিকেলে খবর মেলে, মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে জঙ্গিপুর হাসপাতলে ভর্তি হাইদুল। রেল পুলিশ জানায়, জঙ্গিপুর স্টেশনে একটি মালগাড়ির ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হয়েছেন। হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তির অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তিনি বেহুঁশ হয়ে রয়েছেন। কী ভাবে এমন দুর্ঘটনা ঘটল, তা নিয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত।

সাহিলের দাদু কাবাতুল শেখ বলেন, ‘‘দু’দিন পরেও দোষীরা ধরা পড়েনি। আমরা খুনের ঘটনার সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্ত চাই।’’

ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য অনিতা রবিদাস বলেন, ‘‘সাহিলের মা মোসলেমা খাতুন দু’বছর আগে তাঁর মেয়েকে হারিয়েছিলেন। এক বছর আগে মারা যান তাঁর স্বামী। এখন হারালেন শেষ সম্বল সাহিলকেও।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন