কানে ফোন চালকের? প্রতিবাদ করুন যাত্রীরাই

 বাস চালকের ঊনত্রিশ সেকেন্ডের ফোন কলের জেরে মুর্শিদাবাদে দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন অনেকে। বাঁকুড়ায় যাতে এমনটা না হয়, তার জন্য যাত্রীদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করার পরামর্শ দিলেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:০০
Share:

পথে: নথি যাচাই। নিজস্ব চিত্র

বাস চালকের ঊনত্রিশ সেকেন্ডের ফোন কলের জেরে মুর্শিদাবাদে দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন অনেকে। বাঁকুড়ায় যাতে এমনটা না হয়, তার জন্য যাত্রীদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করার পরামর্শ দিলেন পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ৯ নম্বর রাজ্য সড়কে ও বাঁকুড়া খাতড়া রাজ্য সড়কে পুলিশ কর্মীদের নিয়ে নজরদারি চালাতে নেমেছিলেন জেলা আরটিও-র টেকনিক্যাল ও ননটেকনিক্যাল আধিকারিকেরা। ৯ নম্বর রাজ্য সড়কের ধবনী এলাকায় ও বাঁকুড়া-খাতড়া রাস্তায় পোয়াবাগান এলাকায় বাস ও গাড়ি থামিয়ে কাজগপত্র খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। বাসের যাত্রীদের সঙ্গেও কথা বলেন। গাড়ির চালককে ফোনে কথা বলতে দেখলে যাত্রীদের একজোট হয়ে প্রতিবাদ করতে পরামর্শ দেন। আরটিও-র এক আধিকারিক বলেন, “গাড়ি চালাতে চালাতে চালক ফোনে কথা বলা মানে যাত্রীদের জীবন নিয়ে খেলা করা। তাই যাত্রীদেরই সজাগ থাকতে হবে। আমরা বাস থামিয়ে সমস্ত যাত্রীকে বলেছি, এ রকম কিছু দেখলেই সঙ্গে সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে।’’

আধিকারিকদের এই বক্তব্যে যাত্রীরাও একমত। দুর্গাপুর থেকে বাঁকুড়ামুখী একটি বাসের যাত্রী সৈকত পাল বলেন, “মুর্শিদাবাদের ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, চালক সতর্ক না থাকলে কী ঘটতে পারে। চোখের সামনে দেখলে নিশ্চই প্রতিবাদ করব।’’

Advertisement

এই জেলায় দুর্ঘটনা রুখতে কী করছে প্রশাসন?

বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা জানান, সম্প্রতি রাজ্য থেকে গাড়ির গতি মাপার যন্ত্র দেওয়া হয়েছে বাঁকুড়া পুলিশকে। সেই যন্ত্র ব্যবহারও করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার বলেন, “সরকারি ও বেসরকারি বাসের চালকদের নিয়ে ইতিমধ্যেই আমরা বৈঠক করে গাড়ি চালানোর সময় কোন কোন নিয়ম মানতে হবে তা স্পষ্ট করে দিয়েছি। সমস্ত থানাই নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।”

সম্প্রতি দুর্ঘটনা এড়াতে বাঁকুড়া জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জেলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা জারি করেছেন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, রানিগঞ্জ-বাঁকুড়া ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের হেভির মোড় ও সংলগ্ন এলাকায় গাড়ির গতি ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার, বাঁকুড়া-বিষ্ণুপুর ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধলডাঙা ও সংলগ্ন এলাকায় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার, বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ৬০-এ জাতীয় সড়কের পোয়াবাগান মোড় থেকে বাঁকুড়া শহরে ঢোকার রাস্তায় ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার, বাঁকুড়া শহরের লালবাজার মোড় থেকে রবীন্দ্রসরণি এলাকায় ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটারের মধ্যে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

জেলাশাসক বলেন, “নিয়ম ভাঙলে আমরা বরদাস্ত করব না। তবে সাধারণ মানুষের সচেতনতা সবার আগে দরকার।”

নিয়ম যে মানা দরকার, সে কথা মানছেন বাঁকুড়ার বাস মালিক সমিতির সম্পাদক অঞ্জন মিত্রও। তিনি বলেন, “সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত বাস চালক ও কর্মীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, কোনও ভাবেই চলন্ত বাসে ফোন ধরা যাবে না। কারও বিরুদ্ধে এ নিয়ে অভিযোগ উঠলে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেব।” বেলিয়াতোড়ের জগন্নাথপুর-বাঁকুড়া রুটে চলা একটি বাসের মালিক তুষারকান্তি আঢ্য বলেন, “খুব দরকারে চালককে বাস থামিয়ে ফোন করতে বলেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন