Body Donation

স্তব্ধতার মাঝেই দেহদান বৃদ্ধের

 বৃহস্পতিবার সকালে সেরিব্রাল অ্যাটাকে মৃত্যু হয়। কিষণবাবুর বয়স হয়েছিল ৮১।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২০ ০৩:১৯
Share:

কিষণ চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

দেশ জোড়া লক-ডাউনের মাঝেই স্বামীর দেহ-দান করলেন স্ত্রী। বৃহস্পতিবার দুপুরে দেহটি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছে হস্তান্তর করা হয়।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মৃতের নাম কিষণ চট্টোপাধ্যায়। বাড়ি সিউড়ি হাটজনবাজার এলাকার কাননপল্লি। কিষণবাবুর স্ত্রী কৃষ্ণপ্রিয়া ঠাকুর (চট্টোপাধ্যায়) ও তাঁর কয়েক জন আত্মীয় দেহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন। কৃষ্ণপ্রিয়াদেবী জানান, বুধবার দুপুরে অসুস্থ অবস্থায় সিউড়ি সদর হাসপাতালে স্বামীকে ভর্তি করানো হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে সেরিব্রাল অ্যাটাকে মৃত্যু হয়। কিষণবাবুর বয়স হয়েছিল ৮১। একমাত্র মেয়ে তামান্না (রিস্তা) গণিতের গবেষিকা। কৃষ্ণপ্রিয়াদেবী জানান, স্বামীর ইচ্ছেয় এই দেহ দান। কিষণ চট্টোপাধ্যায়ের আত্মীয় দেবেশ ঠাকুর জানান, সিউড়ির কাছে চাতরা গ্রামে কিষণবাবুর জন্ম।

Advertisement

বীরভূম জেলা স্কুলের কৃতী ছাত্র কিষণ পরে পদার্থবিঞ্জানে স্নাতকত্তরে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান হয়ে স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা চলাকালীন নকশাল আন্দোলনে যুক্ত হন। চারু মজুমদার, কানু সান্যালদের সংস্পর্শেও এসেছিলেন। প্রায় সাত বছর কারাবাস করেন। সাহিত্যিক সমরেশ বসু এবং সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের উপন্যাসে কিষণ চট্টোপাধ্যায়ের উল্লেখ আছে।

বৃহস্পতিবার সকালে মৃত্যুর পরে পাড়ার বাসিন্দা শিক্ষক সত্যজিৎ পাল, নাট্যকর্মী সুজিত ঠাকুররা দেহ হাসপাতালে পাঠাতে উদ্যোগী হন। সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় বীরভূম ভলান্টিয়ারি ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনও। জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, ভাল কাজের জন্য দেহটি রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে যতটুকু সাহায্য করার করা হয়েছে।

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রির কথায়, ‘‘করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যখন সকলেই ব্যস্ত, তার মাঝে এমন উদ্যোগ প্রশংসনীয়।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়াদের জন্য বছরে চারটি করে দেহ লাগবে। দুটি দেহ জেলা থেকে পাওয়া গিয়েছে। বাকি দুটি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। আরও দেহ দরকার। তবে অনেকে অঙ্গীকারও করেছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন