Ratha Yatra

Bankura Ratha Yatra: ভিড় সামলাতে হিমশিম পুলিশ

পরম্পরা মেনে এ দিন সকালে মাধবগঞ্জের মূল মন্দির থেকে খোল-করতাল, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে রাধামদন গোপাল জীউয়ের বিগ্রহ নিয়ে শুরু হয় মন্দির পরিক্রমা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২১ ০৭:৪৩
Share:

অসতর্ক: সোমবার সকালে বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জ। নিজস্ব চিত্র

আশঙ্কা সত্যি করে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের মাধবগঞ্জের রথে ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশকে। বিষ্ণুপুরের রথ কমিটিগুলিকে নিয়ে বারবার বৈঠকের পরেও, সোমবার রথ চত্বর ছিল ভিড়ে ঠাসা। দূরত্ব-বিধি দূরে থাক, মাস্ক ছাড়াই ভক্তদের একাংশ মন্দির পরিক্রমা করেন অবলীলায়। এমনকি, বিনা বাধায় ব্যারিকেড পেরিয়ে বিগ্রহের কাছে ভিড় জমাতে দেখা গিয়েছে তাঁদের।

Advertisement

এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) কুতুবউদ্দিন খান বলেন, “রথ কমিটিগুলিকে নিয়ে একাধিকবার বৈঠক হয়েছে। দূরত্ব-বিধি ও স্বাস্থ্য-বিধি মেনে রথ উৎসব পরিচালনার দায়িত্ব নিয়েও কেন ভিড় সামলানো গেল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” নির্দেশ সত্ত্বেও কেন রথ চত্বরে পুণ্যার্থীদের ভিড় জমল, তা নিয়ে রথ উৎসব কমিটির সঙ্গে কথা বলা হবে বলে জানান এসডিও (বিষ্ণুপুর)অনুপকুমার দত্ত-ও।

পরম্পরা মেনে এ দিন সকালে মাধবগঞ্জের মূল মন্দির থেকে খোল-করতাল, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে রাধামদন গোপাল জীউয়ের বিগ্রহ নিয়ে শুরু হয় মন্দির পরিক্রমা। নাম-সংকীর্তনের মাধ্যমে শোভাযাত্রা সহকারে বিগ্রহ বসানো হয় রথে। সেখানে মাঙ্গলিক ক্রিয়া সারার পরে, ব্যারিকেডের ভেতরে পুরোহিতেরা তিন বার ছোট রথে টান দেন। পরে, মন্দিরের ভিন্ন তোরণ দিয়ে বিগ্রহকে আনা হয় মূল মন্দিরে। তবে গোটা পর্বেই ভিড় চোখে পড়েছে।

Advertisement

মাধবগঞ্জ এগারোপাড়া রথ উৎসব কমিটির তরফে খোকন মহান্তি যদিও বলেন, “চেষ্টা করেছিলাম, দূরত্ব-বিধি মেনে নিয়মমাফিক রথের ক্রিয়াকর্ম করতে। অনেকটাই সম্ভব হয়েছে। ব্যারিকেডের মধ্যে পুরোহিত ও নাম সংকীর্তনকারীরা ছিলেন। তবে রথে বিগ্রহ থাকাকালীন মহিলারা নিজ হাতে পুজো দিতে ভিড় করেন। সবাই চেনা-জানা। কাকে বারণ করব? আরও সতর্ক হওয়ার চেষ্টা করছি।” স্থানীয় কাকলি সেন, শেফালি কাউড়িরা জানান, বছরের একটা দিন কাছ থেকে পুজো দেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি। তবে কৃষ্ণগঞ্জের আটপাড়া ষোলোআনা কমিটির রথ প্রাঙ্গণে সে ভাবে ভিড় ছিল না। দূরত্ব-বিধি মেনে মাঙ্গলিক ক্রিয়াকর্ম হয়েছে বলে জানান কমিটির সভাপতি রবিলোচন দে।

বাঁকুড়া শহরের রাস্তাঘাটে অবশ্য ভিড় অন্য বারের তুলনায় অনেক কম ছিল। ভক্তেরা রথতলায় গিয়ে দূর থেকে রথে রাখা বিগ্রহকে প্রণাম করেন। রথতলা চত্বরে কিছু ছোট দোকানপাট বসেছিল। ভিড় নিয়ন্ত্রণে ছিল বাঁকুড়া সদর থানার পুলিশ। বিভিন্ন পাড়ায় মাইকের উৎপাতের অভিযোগও এ বার ওঠেনি।

এ দিকে, পুরুলিয়ার মানবাজারে সেবাইতের কোলে চড়ে মাসির বাড়ি গেলেন জগন্নাথদেব, বলরাম ও সুভদ্রা। মানবাজার থানার গড় পাথরমহড়া রাজবাড়ি থেকে হাটতলায় মাসির বাড়ি পর্যন্ত কীর্তন সহকারে বিগ্রহকে নিয়ে যাওয়া হয়। যাত্রাপথে মানব-শৃঙ্খল করা হয়েছিল। সামনে ও পিছনে পুলিশ বাহিনী মজুত থাকায় দূর থেকেই প্রণাম জানাতে দেখা গিয়েছে সাধারণ মানুষদের। রাজবাড়ির প্রতিনিধি দেবাশিসনারায়ণ দেব বলেন, ‘‘প্রশাসনের নির্দেশমতো রাস্তায় না থেমে একেবারে মাসির বাড়িতে জগন্নাথদেবকে পৌঁছে
দেওয়া হয়েছে।’’

আগে থেকে ভিড় না করার আবেদন মাইকে জানানো হয়েছিল বলরামপুরে রথ কমিটির তরফে। এ দিন তিন বিগ্রহকে ছোট একটি রথে চড়িয়ে সেবাইতেরা টেনে নিয়ে যান। বাসিন্দাদের একাংশের যদিও আক্ষেপ, রথের চারপাশে পুলিশ মোতায়েন থাকায় দেবতাকে ভাল ভাবে দর্শন করতে পারেননি।

ঝালদা রথ কমিটির তরফে শ্যামল কর্মকার জানান, নামোপাড়া রথ ময়দান থেকে ট্রাক্টরে রথ টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আগে আনন্দবাজার পর্যন্ত রথ যেত। এ বারে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যাওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহ সেখানেই পুজো চলবে। জয়পুরে রথ কমিটির অন্যতম কর্তা বিশাল ভাণ্ডারি বলেন, ‘‘চটিপাড়া থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত কীর্তন সহকারে কোভিড-বিধি মেনে রথযাত্রা হয়েছে। তার আগে রীতিমাফিক পুজো হয়েছে।’’

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পুঞ্চা ও পায়রাচালি বাজারে প্রতীকী ভাবে রথ টানা হয়েছে। ভিড় ছিল না। সকাল থেকে সব মন্দিরেই পুজো-অর্চনা, কীর্তন হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement