উপহার। —নিজস্ব চিত্র।
লাঠিই নাকি ওঁদের পরিচয়। এমন ভাবেই এত দিন পুলিশকে দেখে আসত তারা। সেখানে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় কেন্দ্রে ঢোকার মুখে সেই পুলিশেরই হাতে গোলাপ ফুল দেখে চমকে উঠেছিল তবসুম, জেনিফাররা। শেষমেশ পুলিশের দেওয়া গোলাপফুল ও কলমের উপহার-শুভেচ্ছা নিয়েই পরীক্ষার ময়দানে লড়তে হাসি মুখে ঢুকে গেল এ বারের মাদ্রাসা বোর্ডের ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। সোমবার পরীক্ষার প্রথম দিন এমনই দৃশ্য দেখা গেল রামপুরহাট মহকুমার পাঁচটি পরীক্ষা কেন্দ্রে।
এ দিন নলহাটি হাইমাদ্রাসায় পুলিশ ফুল ও কলম নিয়ে স্কুলের গেটের মুখে সকাল ১০টা থেকেই অপেক্ষা করছিল। ছিলেন নলহাটি থানার ওসি-সহ কয়েক জন পুলিশ কর্মী। তাঁদের হাতে ছিল ফুলের ঝুড়ি ও পেনের বাক্স। সকাল ১১টা ২৫ মিনিট নাগাদ পরীক্ষা কেন্দ্রের গেট খোলা হয়। ঢোকার সময় পুলিশের কাছ এই আপ্যায়ন পেয়ে অভিভূত হন পরীক্ষার্থী তবস্সুম বেগম, জেনিফার খাতুন, সীমা মাল ও মুক্তার খানেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘আমার তো দেখে আসছি পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে পুলিশের লাঠি ও বন্দুকের টহল। জীবনে প্রথম বড় পরীক্ষা দিতে এসে উপহার পাব, ভাবিনি।’’ পরীক্ষা কেন্দ্রের ভিতরে ছিলেন স্কুলশিক্ষক বাবর আলি। তিনিও বলেন, ‘‘এই আপ্যায়নে ছাত্রছাত্রীরা উদ্বুদ্ধ হবে।’’
পরিকল্পনাটি যাঁর মস্তিষ্কপ্রসূত, সেই এসডিপিও (রামপুরহাট) ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘পুলিশ সম্পর্কে ছাত্রছাত্রী ও সাধারাণ মানুষের একটা ধারণা আছে। পুলিশ শুধু মাত্র লাঠি-বন্দুক নিয়ে থাকে। পুলিশের সঙ্গে সাধারণের একটা দূরত্ব তৈরি হয়। সেই দূরত্ব কমিয়ে আনতে পারে ছাত্রছাত্রীরাই। তাই আমরা ওদের পাশে দাঁড়াতে চাই।’’ তাঁদের একটাই বার্তা— ‘সকলেরই পাশে আছে পুলিশ’।