প্রতীকী ছবি।
তৃণমূলের লোকজন তাদের এক কর্মীকে মারধর করেছে, এই অভিযোগে পথ অবরোধ করলেন বিজেপি ও বজরং দলের কর্মীরা। অবরোধ তুলতে গেলে বিজেপি কর্মীদের ছোড়া পাথরে চোট পেলেন কয়েক জন পুলিশ কর্মী। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে কাশীপুর থানার সোনাথলী গ্রামে। হামলার অভিযোগে তিন বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। ওই দিন দুপুরে সোনাথলীর বাসিন্দা বিজেপি সমর্থক তথা রাঙামাটি রঞ্জনডি হাইস্কুলের এক শিক্ষককে তৃণমূলের লোকেরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ তোলে বিজেপি ও বজরং দল। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের পাল্টা দাবি ছিল, ওই শিক্ষক স্কুলের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছিলেন। গ্রামের লোকজন ও ছাত্রীর আত্মীয়রা স্কুলে গেলেও তাদের কোনও কর্মী ওই শিক্ষককে মারধর করেনি। সোমবার রাতে ওই শিক্ষককে নিয়ে বজরং দলের কর্মীরা কাশীপুর থানায় যান তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে। তখন থানার বাইরে তৃণমূল তাদের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়ে ফের মারধর করে বলে বিজেপি-র অভিযোগ। রাতেই অবশ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওই শিক্ষকের অভিযোগ গ্রহণ করে পুলিশ। পাশাপাশি ওই ছাত্রীর বাবাও রাতে পুলিশের কাছে বিজেপি কর্মী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি অভিযোগের ভিত্তিতে পৃথক মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার সোনাথলী গ্রামের পরিস্থিতি ফের তেতে ওঠে। এ দিন সকাল ৮টা থেকে গ্রামের মোড়ে রাস্তা অবরোধ শুরু করেন বিজেপি ও বজরং দলের কর্মীরা। এলাকায় পাল্টা মিছিল শুরু করে তৃণমূল। পরিস্থতি বুঝে বড় পুলিশ বাহিনী সোনাথলী যায়। ছিলেন এসডিপিও (রঘুনাথপুর) অভিজিৎ চৌধুরী, সিআই (কাশীপুর) এবং ওসি। অভিযোগ, অবরোধ তোলার সময়ে পুলিশকে লক্ষ করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন বিজেপি ও বজরং দলের লোকজন। কয়েক জন পুলিশ কর্মী চোট পান। ঘটনাস্থল থেকেই পুলিশ তিন বিজেপি কর্মীকে ধরে।
যদিও পুলিশের উপরে হামলা চালানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরুলিয়া জেলা বিজেপি নেতা কমলাকান্ত হাঁসদা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের লোকজন আমাদের কর্মী স্কুল শিক্ষককে স্কুলে ঢুকে মারধর করেছিল। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে আবার মারধর করে তৃণমূল। আমরা তারই প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেছিলাম। পুলিশ অবরোধ সরাতে এসে লাঠি চালিয়েছে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূলের নেতা তথা কাশীপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ওই শিক্ষক স্কুলেরই এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত। গ্রামের লোক ঘটনার প্রতিবাদ করেছেন। আমাদের কোনও কর্মী ওই শিক্ষককে মারধর করেনি। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তের পক্ষ নিয়ে বিজেপি গোটা ঘটনা ধামাচাপা দিতে রাজনৈতিক রং লাগাচ্ছে। ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করে পুলিশের উপরে হামলা করে অরাজকতা তৈরি করছে।”
শ্লীলতাহানির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন ওই শিক্ষক।