তথ্য জানার অধিকার আইনের আবেদনপত্রে তিনি এসডিও-কে লিখেছেন ‘দি গ্রেট কালিদাস’। আবার আর এক সরকারি আধিকারিককে দিয়েছেন মারধরের হুমকি!
শুক্রবার দুপুরে নিজের দফতর থেকে নটরাজ সাহা নামে ওই ব্যক্তিকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন রামপুরহাটের মহকুমাশাসক উমাশঙ্কর এস। শহরেরই ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ওই বাসিন্দার বিরুদ্ধে পুলিশ সরকারি কাজে বাধা এবং সরকারি আধিকারিককে হুমকির ধারায় মামলা রুজু করেছে। পরে এসডিও বলেন, ‘‘আরটিআই-এর আবেদনে ওই ব্যক্তি আমাকে অপমানজনক কথা লিখেছেন। পাশাপাশি সিডিপিও-কে মারার হুমকিও দিয়েছেন। এ দিন এ নিয়ে তাঁকে অফিসে ডাকা হলে উল্টে তিনি টেবিল চাপড়ে দুর্ব্যবহার করেন।’’ ধৃত ব্যক্তি যদিও সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন। উল্টে তাঁর পরিবারের দাবি, রামপুরহাট ১ ব্লকে আইসিডিএস প্রকল্পে কর্মী নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তা নিয়ে খোঁজখবর করতেই গোটা বিষয়টিকে ধাপাচাপা দেওয়ার জন্য এসডিও নটরাজবাবুকে দফতরে ডেকে এনে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশকে দিয়ে গ্রেফতার করিয়েছেন।
রামপুরহাট ১ ব্লকের সিডিপিও শান্তি বাগদি এ দিন জানান, ওই কর্মী নিয়োগে পাঁচ হাজার আবেদনকারী পরীক্ষা দিয়েছিলেন। আরটিআই করে ধৃত ব্যক্তি প্রত্যেক আবেদনকারীর উত্তরপত্র দেখতে চেয়েছিলেন। পাশাপাশি কোন পরীক্ষক কোন আবেদনকারীকে কত নম্বর দিয়েছেন, তা-ও তিনি জানতে চান। শান্তিবাবু বলেন, ‘‘ওই কর্মী নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। তবু আবেদনকারীকে কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, পরবর্তী আবেদনপত্রে তিনি অত্যন্ত কুভাষা প্রয়োগ করে তথ্য জানতে চেয়েছেন’’
ধৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৪ মার্চ রামপুরহাট ১ ব্লকের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী পদে সফল প্রার্থীর তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল। নটরাজবাবুর বোন সঙ্গীতা সাহার তাতে নাম ছিল না। সঙ্গীতাদেবীর দাবি, ‘‘যাঁরা পরীক্ষায় ফেল করেছে, তাঁদের নামই ওই তালিকায় রাখা হয়েছে। অথচ উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নাম তালিকাতে নেই!’’ এ ব্যাপারে তাঁরা ‘তথ্য জানার অধিকার আইনে’ গত ১৬ মার্চ একটি আবেদন করেন। তাঁর অভিযোগ, তিন মাস পেরিয়ে যাওয়ার পরে এখনও সব তথ্য পাওয়া যায়নি। দিন তিনেক আগে এসডিও অফিস থেকে তথ্য দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু, দু’দিন ধরে ঘুরলেও কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি বলে সঙ্গীতাদেবীর দাবি। ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি বলেন, ‘‘আজ ফের অফিসে ডেকে পাঠানোর পরে দাদাকে মিথ্যা অভিযোগে পুলিশকে দিয়ে গ্রেফতার করাল। হাইকোর্টে নিয়োগ নিয়ে আমাদের দায়ের করা মামলা চলছে। এ দিনের ঘটনার কথা আমাদের আইনজীবীকে জানাব।’’
ওই পরিবার দুর্নীতি নিয়ে যে অভিযোগ তুলেছে, তা নিয়ে পরে যোগাযোগ করা হলে এসডিও বলেন, ‘‘আইসিডিএস প্রকল্পে কর্মী নিয়োগ নিয়ে হাইকোর্টে মামলা চলছে। বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করতে চাই না।’’