চুরির পরে। নিজস্ব চিত্র
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের দফতর যে চত্বরে, সেই ইভলিন লজের ইস্কো অফিসার্স আবাসনের তালা ভেঙে লুঠপাট চালাল দুস্কৃতীরা। সোমবার সকালে এই খবর জানাজানি হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। আসানসোল দক্ষিণ পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেছেন গৃহকর্তা বরুণ মণ্ডল। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে বাড়িতে ছিলেন না বরুণবাবুরা পারিবারিক কাজে দুর্গাপুরে গিয়েছিলেন। সোমবার সকালে তিনি প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ফোনে ঘটনার খবর জানতে পারেন। ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই আসানসোলে নিজের আবাসনে চলে আসেন। বরুণবাবু বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা দরজার একাধিক তালা ভেঙে ঘরে ঢুকেছে। খান তিনেক আলমারি ভেঙে গয়না, নগদ টাকা ও বৈদ্যুতিক সামগ্রি লুঠ করেছে।’’ তিনি জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুর নন্দ অচার্য একজন সাহিত্যিক। বহু জায়গা থেকে পাওয়া তাঁর বহু স্মারকও দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে নিয়ে পালিয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, লুঠপাট করার আগে ওই আবাসনের বাকি ঘরগুলির দরজায় বাইরে থেকে ছিটকিনি তুলে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পড়শি তথা স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষিকা তনুশ্রী দত্ত সেন জানিয়েছেন, রাত প্রায় দেড়টা পর্যন্ত তাঁরা জেগেছিলেন। কিন্তু কোনও আওয়াজ পাননি। তিনি বলেন, ‘‘সকাল সাতটা নাগাদ ঘুম থেকে উঠে বুঝতে পারি বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করা আছে। পরে অন্যদের ডাকাডাকি করে দরজা খোলানোর ব্যবস্থা করি।’’
এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ওই আবাসন পাহারা দেওয়ার জন্য আবাসিকেরাই নিজেদের উদ্যোগে চারজন নিরাপত্তারক্ষী রেখেছেন। ওই রাতে কর্মরত নিরাপত্তারক্ষী অতুল সহিস ও রামমুখিরা জানিয়েছেন, রাত দু’টো নাগাদ তাঁরা শেষ বারের মতো ওই আবাসনের পিছনের দিকে টহল দিয়েছেন। তখনও কোনও কিছু নজরে পড়েনি। রবিবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যেহেতু এই চত্বরেই পুলিশ কমিশনারের দফতর রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা সেখানে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন থাকে। সারা রাত ধরেই কার্যত একাধিক পুলিশগাড়ি টহল দেয়। এরপরেও দরজার তালা ভেঙে এই ধরনের লুঠপাটের ঘটনায় তাঁরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। এডিসিপি (সেন্ট্রাল) জে মার্সি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা নেই। খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। অভিযোগ হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’