পায়ে পায়ে কলকাতায়, বিচার চেয়ে সরব

গত ১০ জুন পুরুলিয়ার বোরোর জামিরা টিলা থেকে উদ্ধার হয় বছর সতেরোর মণিকা মাহাতোর দেহ। বড় মামরো গ্রামের ওই তরুণী বান্দোয়ানের এ এন ঝা হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া ও বোরো শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

দাবি নিয়ে পথে। নিজস্ব চিত্র

পুরুলিয়ার ছাত্রী-খুনে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে সরব হয়েছে জেলার অনেক সংগঠন। অভিযোগ ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও। এ বার পুরুলিয়া থেকে পায়ে হেঁটে কলকাতা রওনা দিয়েছেন তিন যুবক। হাতে ধরা পোস্টার। টানা সাত দিন হাঁটার পরে, আগামী ৯ জুন তাঁদের কলকাতা পৌঁছনোর কথা। জানিয়েছেন, ওই দিন কলকাতার রবীন্দ্রসদনের সামনে উপযুক্ত তদন্তের দাবিতে তাঁরা সরব হবেন।

Advertisement

গত ১০ জুন পুরুলিয়ার বোরোর জামিরা টিলা থেকে উদ্ধার হয় বছর সতেরোর মণিকা মাহাতোর দেহ। বড় মামরো গ্রামের ওই তরুণী বান্দোয়ানের এ এন ঝা হাইস্কুলে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ছিল। পড়াশোনা করত জেঠুর বাড়িতে থেকে। ৩ জুন, ঝড়বৃষ্টির দিনে পড়তে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায় সে। মণিকার বাবা সমীরকুমার মাহাতোর অভিযোগ, তখন পুলিশের কাছে গেলেও অভিযোগ নিতে গড়মসি করা হয়। শেষ পর্যন্ত ৬ তারিখ অপহরণের মামলা দায়ের হয়। ৯ তারিখ গ্রেফতার করা হয় বোরোর হাতিরামগোড়া গ্রামের দুই যুবক অরুণ মাহাতো ও অরিজিৎ মাহাতোকে। তার পরেই উদ্ধার হয় মণিকার দেহ। এখন ওই মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।

মণিকার পরিবার ও স্থানীয় কিছু সংগঠন এই ঘটনার পুলিশের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আসছেন। গত ৩ জুন গড়জয়পুরের তিন নাট্যকর্মী দিব্যজ্যোতি সিংহ দেও, রাণাপ্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং আকাশ শিকদার পুরুলিয়া থেকে পদযাত্রা শুরু করেছেন। বাঁকুড়া, আরামবাগ হয়ে প্রায় তিনশো কিলোমিটার পথ উজিয়ে তাঁদের কলকাতা পৌঁছনোর কথা। দিব্যজ্যোতি বলেন, ‘‘মণিকার জন্য বিচার চেয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে করতে যাচ্ছি। আমরা চাই, টনক নড়ুক। খুনিরা সবাই শাস্তি পাক। এই আন্দোলনে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের অনেকেই ৯ জুন রবীন্দ্রসদনের সামনে থাকবেন। সবাই মিলে কলকাতায় মিছিল হবে।’’ মণিকার বাবা সমীরবাবু বলেন, ‘‘কলকাতার কর্মসূচিতে আমিও থাকব।’’

Advertisement

তবে পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার আকাশ মাঘারিয়া দাবি করে এসেছেন, তদন্তে তাঁরা ঠিক পথেই এগোচ্ছিলেন। ধৃত অরুণ মাহাতোকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণও করেছিল পুলিশ। দাবি করেছিল, সম্পর্কের টানাপড়েনের জেরে রাগের মাথায় মণিকাকে খুনের কথা জেরায় স্বীকার করেছে অরুণ। কিন্তু মণিকার পরিবারের দাবি, রীতিমতো পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছিল ওই তরুণীকে। দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছেন তাঁরা।

যে পথে অরুণ মণিকাকে জামিরা টিলায় নিয়ে গিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের, বুধবার দু’টি গাড়িতে সিআইডির প্রতিনিধিরা সেই রাস্তা ধরে সরেজমিন তদন্ত করেন। বিভিন্ন জায়গার ছবি তুলে নিয়ে যান তাঁরা। পরে সিআইডি মণিকার বাড়িতে গিয়েও পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে। তবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে কোনও কথা বলতে চাননি কেউই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন