অর্ধেক পঞ্চায়েত তৃণমূলের

জেলার ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫টিতে বোর্ড গঠন হয়েছে। স্থগিত থাকা সমিতিগুলির মধ্যে শুধু সাঁতুড়িতে বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথপুর শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৩১
Share:

ফাইল চিত্র।

বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া মোটের উপরে নির্বিঘ্নেই মিটল পুরুলিয়ায় স্থগিত থাকা পঞ্চায়েতগুলির বোর্ড গঠন। শুক্রবার ছিল বোর্ড গঠনের তৃতীয় ও শেষ দিন। এ দিন বোর্ড গঠন হয়েছে রঘুনাথপুর মহকুমার দু’টি ব্লক রঘুনাথপুর ১ ও সাঁতুড়ি ব্লকের ছ’টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে। তিনটি করে পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল ও বিজেপি। আর সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রত্যাশামাফিক বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হয়েছেন রীনা লায়েক ও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রথমে সিপিএমের প্রতীকে জিতে বিজেপি ঘুরে তৃণমূলে যোগ দেওয়া অসীম চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

শুক্রবারের বোর্ড গঠন শেষ হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, পুরুলিয়ার প্রায় ৫৩ শতাংশ পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে রাজ্যের শাসকদল। আর অন্যতম বিরোধী বিজেপি বোর্ড গড়তে সমর্থ হয়েছে ২৪ শতাংশ পঞ্চায়েতে। তবে বিজেপির জেলা সভাপতি বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর অভিযোগ, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে শুরু করে বোর্ড গঠন পর্যন্ত পুলিশ, প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস চালিয়েছে তৃণমূল। ভয়, প্রলোভন দিয়ে আমাদের জেতা সদস্যদের তৃণমূলে যোগ দিতে কার্যত বাধ্য করা হয়েছে। সুষ্ঠ ভাবে সব কিছু হলে আমরাই জেলার পঞ্চাশ শতাংশের বেশি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়তাম।” বিজেপির অভিযোগ অবশ্য মানতে চায়নি তৃণমূল। দলের জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর দাবি, ‘‘সুষ্ঠ ভাবে নির্বাচন না হলে বিজেপি ওই সংখ্যক পঞ্চায়েতে জিতল কী ভাবে? ওরাই বরং বোর্ড গঠনের সময়ে দুষ্কৃতীদের মদত দিয়ে জেলা জুড়ে অশান্তি তৈরি করতে চাইছে।”

চলতি মাসের প্রথম দিকে স্থগিত থাকা ৪৪টি পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি দেন জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়। বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যায়ক্রমে বোর্ড গঠন হয়েছে ওই পঞ্চায়েতগুলিতে। শেষ দিন রঘুনাথপুর ১ ব্লকের বেড়ো, খাজুরা, বাবুগ্রাম ও শাঁকা পঞ্চায়েত এবং সাতুঁড়ির গড়শিকা এবং সাঁতুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন হয়। রঘুনাথপুরের শাঁকা-সহ সাঁতুড়ির দুই পঞ্চায়েত নিয়ে মোট তিনটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে বিজেপি। অন্যদিকে, রঘুনাথপুরের বাকি তিনটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল।

Advertisement

জেলার ২০টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫টিতে বোর্ড গঠন হয়েছে। স্থগিত থাকা সমিতিগুলির মধ্যে শুধু সাঁতুড়িতে বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিল। আইন-শৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি এখনও হয়নি, এই যুক্তি দেখিয়ে বলরামপুর ও জয়পুরে বোর্ড গঠন স্থগিত রাখা আছে। বরাবাজারের পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের বিষয়ে আদালতে মামলা চলছে।

এ দিন প্রত্যাশা মাফিক সাঁতুড়ি পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গড়েছে তৃণমূল। নির্বাচনে এই সমিতিতে সমসংখ্যক আসন পেয়েছিল তৃণমূল ও বিজেপি। পরে বিজেপি ছেড়ে এক জন এবং সিপিএম থেকে বিজেপি ঘুরে আর এক সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। তাতে সাঁতুড়িতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে

যায় তৃণমূল।

এ দিন বোর্ড গঠনের সভায় যাননি বিজেপির সদস্যেরা। শুক্রবার রাতে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সাঁতুড়ির বিজেপির নেতারা সভা বয়কটের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। দলের জেলা সভাপতি দাবি করেন, ‘‘সাঁতুড়িতে তৃণমূল গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। দিনেদুপুরে আমাদের জেতা সদস্যকে অপহরণ করে তাঁকে জোর করে তৃণমূলে যোগ দিতে বাধ্য করেছিল। তাই আমাদের সদস্যেরা বোর্ড গঠনের সভা বয়কট করেছেন।’’ তৃণমূল নেতৃত্ব সেই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে

উড়িয়ে দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন