Birbhum Blast

আবার বিস্ফোরণ দুবরাজপুরে, পাঁচ মাসে আট বার! ‘বোমা শিল্পের’ কারণে বিপদের মুখে স্থানীয়েরা

বার বার কেঁপে উঠছে বীরভূম জেলার দুবরাজপুর। গত পাঁচ মাসে একাধিক বার সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছে বোমা-সহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র। বিস্ফোরণের ঘটনায় আঙুল উঠলেও পুলিশের কাছে কোনও সদুত্তর মেলেনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৩ ১১:২৪
Share:

বিস্ফোরণের পর বার বার উদ্ধার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্রও। তার পাশাপাশি বোমা তৈরির মশলাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। —প্রতীকী চিত্র।

সোমবার তৃণমূল কর্মী শেখ শফিকের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় বীরভূম জেলার দুবরাজপুরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মঙ্গলবার শেখ মরিলাল নামে এক জনকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে মরিলাল মূল অভিযুক্ত শফিকের ভাই। শফিকের পুত্র শেখ শাহরুককেও এই ঘটনায় আটক করেছে পুলিশ। বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দুবরাজপুর থানার পুলিশবাহিনী। অভিযোগ, শফিকের বাড়ির সিঁড়িতে বোমা মজুত ছিল। সেখান থেকেই কোনও ভাবে বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় শফিকের বাড়ির দেওয়াল-সহ ছাদ ফেটে যায়। সোমবার ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিস্ফোরণের কারণ খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে আসবে সিআইডির বম্ব স্কোয়াড।

Advertisement

তবে দুবরাজপুরে যে এই প্রথম বার বিস্ফোরণ হয়েছে তা নয়। এর আগেও বহু বার বিস্ফোরণের সাক্ষী থেকেছেন দুবরাজপুরের বাসিন্দারা। বিস্ফোরণের পর উদ্ধার হয়েছে বোমা, আগ্নেয়াস্ত্রও। তার পাশাপাশি বোমা তৈরির মশলাও উদ্ধার করেছে পুলিশ। বোমা তৈরির কারণেই নাকি বার বার এই এলাকায় বিস্ফোরণ হচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। বার বার বিস্ফোরণের ঘটনায় ভীত তাঁরা। শেখ শফিক নামে দুবরাজপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এখনও আমরা আতঙ্কিত। পুলিশ যেন পুলিশের কাজ করে। দোষীরা তাড়াতাড়ি শাস্তি পান।’’ তাঁদের অভিযোগ, একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সত্ত্বেও ‘বোমা শিল্প’ আটকাতে ব্যর্থ পুলিশ প্রশাসন। শেখ সাজাউদ্দিন নামে সেখানকার এক গ্রামবাসীর বক্তব্য, ‘‘বার বার বিস্ফোরক উদ্ধার হয় এলাকায়। পুলিশ এ বার কড়া পদক্ষেপ করুক।’’

চলতি বছরের ৭ মে দুবরাজপুরের আগয়া গ্রামে শেখ মহিবুল নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের অভিযোগ ওঠে। তার কয়েক দিন আগে ২৯ এপ্রিল একই গ্রামে দেড় কেজি বোমা তৈরির মশলা উদ্ধার করে পুলিশ। ২১ এপ্রিল ব্যাপক বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল আগয়া গ্রামেই। চলতি বছরের মার্চ মাসের গোড়ায় সদাইপুর থানার পুলিশ জামথলিয়া গ্রাম থেকে উদ্ধার করে বন্দুক এবং কার্তুজ। শেখ ইজ়রায়েল নামে এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ওই ওয়ান শাটার বন্দুক এবং কার্তুজ উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশের দাবি। ওই মাসেই দুবরাজপুর ব্লক থেকে এক দুষ্কৃতীকে অস্ত্র-সহ গ্রেফতার করে কাঁকরতলা থানার পুলিশ। পাশাপাশি ওই এলাকা থেকে কার্তুজ-সহ পাইপগানও উদ্ধার করা হয়।

Advertisement

চলতি বছরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সদাইপুরের লালমোহনপুরে রাস্তার পাশের ঝোপ থেকে ৫ বস্তা তাজা বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, উদ্ধার করা বোমার সংখ্যা ২০০টির কাছাকাছি। এই ঘটনার দু’দিন আগে একই এলাকায় একটি কলাগাছের ঝোপ থেকে এক ব্যাগ তাজা বোমা উদ্ধার করা হয় বলে দাবি পুলিশের। ১৪ ফেব্রুয়ারি সদাইপুর থানার পুলিশ একটি পাইপ গান এবং দু’রাউন্ড কার্তুজ-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করে।

তবে এ ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসন নীরব রয়েছে। বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। ২০২১ সালের ২৩ নভেম্বর পদুমা পঞ্চায়েতের গাঁড়া গ্রামে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল দুবরাজপুর। এমনকি বোমাবাজির এক ঘটনায় দুবরাজপুর থানার পুলিশ আধিকারিক অমিত চক্রবর্তী বোমার আঘাতে প্রাণ হারান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন