অবাধে: কালোবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
নির্বিঘ্নেই কাটল শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব। রবিবার উৎসব উপলক্ষে অন্যান্য বারের তুলনায় ভিড় ছিল অনেক বেশি। শান্তিনিকেতন রোডের উপর লজের মোড় থেকে শ্যামবাটি পর্যন্ত যানজটে বেশ কিছুটা নাকাল হয়ে হয় মানুষ। যদিও, যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য বাড়তি পুলিশ কর্মী মোতাযেন করা হয়েছিল। বাড়তি ভিড় থাকলেও সকাল ও সন্ধ্যার অনুষ্ঠান মানুষ এ বার ভালভাবে উপভোগ করতে পেরেছেন বলে দাবি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের।
সন্ধ্যার অনুষ্ঠান শেষে, সোমবার সঙ্গীতভবন, পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের পঠন-পাঠনের ছুটি ঘোষণা করেন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন কুমার দত্ত। তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে বসন্ত উৎসব শেষ হওয়ার জন্য আমি বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের কর্মী, অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, ছাত্রছাত্রীদের ধন্যবাদ জানাই।” প্রথা অনুযায়ী, রবিবার সকাল সাতটায় ‘ওরে গৃহবাসী’ গানের তালে তালে শান্তিনিকেতন গৃহের সামনে থেকে শুরু হয় শোভা যাত্রা।
আশ্রম মাঠে শোভাযাত্রা শেষ হতেই মূল মঞ্চে শুরু হয়ে যায় সঙ্গীত ও নৃত্যানুষ্ঠান। অন্যান্য বছরের তুলনায় ভিড় বাড়তে পারে আগাম আশঙ্কা করেই বাড়তি পুলিশের ব্যবস্থা ছিল। পলাশ ফুলের মালা পড়ে বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী, ভিআইপি গেটে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এ বার তাপমাত্রা কম থাকায় অন্য বছরগুলির মতো জলের কষ্ট পেতে হয়নি বহিরাগত পর্যটকদের। আশ্রম মাঠে মূল অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয়ে যায় আবির খেলা। মাঠের বিভিন্ন জায়গায়, গৌরপ্রাঙ্গণ, আম্রকুঞ্জ, কলাভবন, সঙ্গীতভবনে বসে ছোট ছোট নাচ, গানের আসর।
পর্যটকদের দাপটে যাতে ঐতিহ্যবাহী স্থান গুলির কোনও ক্ষতি না হয় তার জন্য আগাম ব্যবস্থা হিসাবে গৌরপ্রাঙ্গণের ঘন্টাতলা, সঙ্গীতভবন-কলাভবন চত্ত্বরের কালোবাড়ি বাঁশ দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছিল। যদিও, বাঁশের ব্যারিকেট পেরিয়ে অনেককেই ভিতরে ঢুকে পড়তে দেখা যায়। পরে দুপুর ১২টার পরে বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা ও পুলিশ আশ্রম এলাকা ফাঁকা করে দেন। পরে সন্ধ্যা সাত একই মঞ্চে শুরু হয় ‘তাসের দেশ।’ সাড়ে আটটার মধ্যে আনুষ্ঠান শেষে সাড়ে ন’টার মধ্য আশ্রম মাঠ ফাঁকা করে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
তবে অন্য বছরের তুলনায় বাড়তি ভিড় হওয়ায় শান্তিনিকেতন রোডে লজের মোর থেকে শ্যামবাটি পর্যন্ত যানজটে কিছুটা নাকাল হতে হয় মানুষজনকে। যদিও, যানজট নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রচুর পুলিশ কর্মী ও সিভিক ভলিন্টিয়ার মোতায়েন করা হয়েছিল। পুলিশ-প্রশাসন ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বার বসন্ত উৎসবে কোনও রকম অঘটনের খবর নেই।